ফাইল চিত্র।
শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: হাই কোর্টের রায়ে চাকরি গিয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষাকর্মীর। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতের নির্দেশে রাজ্যের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলোর কার্যত মাথায় হাত! এই রায়ে ফরাক্কা ব্লকের সাতটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মোট ১০৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি গিয়েছে বলে খবর। এর মধ্যেই সামনে এসেছে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার অর্জুনপুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছবি। সেখানে একসঙ্গে চাকরি গিয়েছে ৩৬ জন শিক্ষকের। এতজনের চাকরি একসঙ্গে যাওয়ায় স্কুল কীভাবে চলবে তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন প্রধানশিক্ষক ও স্কুল পরিচালন সমিতি।
এই পরিস্থিতিতে অর্জুনপুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক মহম্মদ সোহরাব আলি বলেন, “গ্রামীণ এলাকা। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশি। ৩৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা চাকরি হারিয়েছেন। বাতিল শিক্ষকদের মধ্যে ২০ জন শিক্ষকের নিয়োগ ছিল সরাসরি। বাকি ১৬ জন মিউচুয়াল ট্রান্সফারে এসেছিলেন। হাই কোর্টের রায়ে ৩৬ জনের চাকরি বাতিল হওয়ার ফলে বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পক্ষে ক্লাস নেওয়া খুব মুশকিল।”
এছাড়াও ফরাক্কা ব্লকের নয়নসুখ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৯ জন শিক্ষক ও একজন গ্রুপ সি কর্মী বাতিলের তালিকায় রয়েছেন। আমতলা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৭ জন শিক্ষক ও একজন অশিক্ষক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। বাতিলের তালিকায় রয়েছেন তিলডাঙা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫ জন। ধর্মডাঙা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১১ জন ও নিশিন্দ্রা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক ও একজন অশিক্ষক কর্মীর চাকরি গিয়েছে। নিউ ফরাক্কা (New farakka) উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১১ জন শিক্ষক বাতিলের তালিকায় আছেন।
নিউ ফরাক্কা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন, “বিদ্যালয়ে প্রায় চার হাজার ছাত্রছাত্রী আছে। শিক্ষক ৩৫ জন। আদালতের রায়ে ১১ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিনজন সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত। তিনজন মিউচুয়াল ট্রান্সফারে এসেছিলেন।” অন্যদিকে, নয়নসুখ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতি সোমেন পাণ্ডে জানান, ফরাক্কা ব্লকের সব থেকে পুরনো স্কুল নয়নসুখ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এখানে ৫৫ জন শিক্ষক ছিলেন। আদালতের রায়ে চাকরি গিয়েছে ১৯ জনের। এছাড়া চাকরি হারিয়েছেন একজন গ্রুপ সি কর্মীও।
ফরাক্কা ব্লকের ফিডার ক্যানেলের পশ্চিম পাড়ের আমতলা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়। সেই বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতি সফিকুল ইসলাম বলেন, “আদালতের রায়ে চাকরি হারালেন বিদ্যালয়ের ১৭ জন শিক্ষক ও একজন অশিক্ষক কর্মী। এখন গরমের ছুটি চলছে। স্কুল খোলার পর শিক্ষকের অভাবে স্কুল চালানো খুব মুশকিল হয়ে যাবে। ফরাক্কা ব্লকের ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বাহাদুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়। সেই বিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষক ও একজন অশিক্ষক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন।” বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতি প্রেম কুমার ঘোষ জানান, বিদ্যালয়ে ৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিলেন। তারমধ্যে পাঁচ শিক্ষকের চাকরি চলে গিয়েছে। এছাড়া, একজন অশিক্ষক কর্মীর এই রায়ে চাকরি চলে গিয়েছে। ফলে স্কুলের পঠনপাঠন ব্যাহত হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.