চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: পুজো এলে তাঁর হাতে চিক্কন রূপ পায় পাটের দুর্গা (Durga)। মহিষাদলের রথতলার শিল্পী সমীর চক্রবর্তীর বাড়িতে ‘মা আসছেন’। পুজোর (Durga Puja) অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের হাতে উপহার হিসেবে পাটের দুর্গা মূর্তির বরাত আসে শিল্পী সমীরের কাছে। তৈরি হবে প্রায় দেড় হাজার দুর্গার মুখ।
কাজ মোটেই নয়। মাউন্টবোর্ডে পাট (Jute) পেস্টিং করে তার উপর কৃষ্ণনগরের (Krishnanagar) ঘূর্ণি থেকে আনা মাটির মুখোশ বসিয়ে চলে কারুকাজ। মা কৃষ্ণাদেবী, স্ত্রী ঝুমা পাঠক চক্রবর্তী, এমনকী বছর দশের মূক বধির ছেলে প্রান্তিক চক্রবর্তী পর্যন্ত তাঁর কাজে সহ-শিল্পীর ভূমিকা নিয়ে থাকেন। তাছাড়া আরও ৪ জন সহশিল্পী কর্মশালায় এই শিল্প কাজে ব্যস্ত থাকেন।
ইতিমধ্যে এক হাজার দুর্গার মুখোশ তৈরি সম্পূর্ণ। তৈরি হবে আরও ৫০০। মূলত কলকাতার (Kolkata) বিভিন্ন পুজো কমিটির থেকেই এই ফরমায়েশি কাজের বরাত। চওড়া ১২ ইঞ্চি এবং লম্বায় ১৮ ইঞ্চি এক একটি মূর্তির। কলকাতা ছাড়িয়ে দিল্লি, মুম্বই, চণ্ডীগড় বহু দূর-দূরান্তে মহিষাদলের এই কর্মশালা থেকে দুর্গা মুখোশ পাড়ি দেয়।
শিল্পী সমীর চক্রবর্তী জানান, “প্রতি বছরের মতো এবারও পাটের দুর্গা মুখোশ তৈরির কাজ চলছে । অর্ডার সাপ্লাই করেই সংসারের মুখে হাসি ফোটানোর রসদ সংগ্রহ করে থাকি। আগামী দিনে পাট দিয়ে বৃহৎ পরিসরে মণ্ডপ সজ্জার কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।” পাটের দড়ি, ব্যাগ হয়, বস্তা হয়। হয় আরও কিছু গৃহ সামগ্রী। কিন্তু দেবদেবী মূর্তি, বিশেষ করে বাংলার প্রধান উৎসবের আরাধ্যা দেবীমূর্তি যেভাবে নিপুণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে, তা প্রশংসা কুড়িয়েছে সারা দেশেই। পুজোর আগে মহিষাদলের চক্রবর্তী বাড়ির এই হস্তশিল্প কর্মশালা কয়েকশো দুর্গার ঠিকানা হয়ে উঠেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.