ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: বিমল গুরুংকে ধরতে সিকিমে রাজ্য পুলিশের অভিযানে বিতর্ক। এই নিয়ে দুই রাজ্যের পুলিশের মধ্যে সংঘাত তৈরি হয়েছে। সিকিম পুলিশের অভিযোগ, পর্যটক সেজে বিনা অনুমতিতে গুলি চালায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এই নিয়ে কালিম্পংয়ের এসপির বিরুদ্ধে তারা মামলা করেছে। শুরু থেকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার বিরোধী হলেও আচমকা সুর বদলেছেন বিমল গুরুং। গোপন ডেরা থেকে মোর্চা সুপ্রিমো অডিও বার্তায় জানান, ১২ সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকারের ডাকে বৈঠকে শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় থাকবেন মোর্চার প্রতিনিধিরা।
[আরও প্যাঁচে মোর্চা, গুরুং-রোশনের নামে জারি লুক আউট নোটিস]
শুক্রবার রাজ্য পুলিশের এই অভিযান ঘিরে দুই রাজ্যের সম্পর্ক ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। কালিম্পংয়ের এসপি অজিত সিং যাদবের নামে সিকিমে এফআইআর হয়েছে। সিকিম পুলিশের অভিযোগ নামচির কাছে মাটিতার এলাকায় পর্যটকের বেশে পুলিশ তাদের রাজ্যে ঢোকে। বিমল গুরুং যেখানে বৈঠক ডেকেছিলেন সেখানে তাদের অনুমতি ছাড়াই গুলি চালানো হয়। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, গুরুংয়ের অনুগামীরা গুলি চালান। রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠলেও তা অস্বীকার করা হয়েছে। দুই রাজ্যের পুলিশের মধ্যে টানাপোড়েনের মধ্যে পাহাড় জুড়ে ধরপাকড় শুরু হয়েছে। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর-সহ একাধিক অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কার্শিয়াং পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণা লিম্বুকে। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিনি অভিযুক্ত। শুক্রবারের ঘটনায় ধৃত নারী মোর্চার নেত্রীর সাবিত্রী রাইকে ট্রানজিট রিমান্ডে রাজ্যে আনার জন্য নামচি আদালতে আবেদন জানায় রাজ্য পুলিশ। হাতে গ্রেপ্তার হওয়া মোর্চা নেতা শঙ্কর অধিকারী-সহ কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক সদস্যকে এদিন শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তাদের জেল ও পুলিশ হেফাজত হয়।
[মোদি কথাই শুনতে চান না, বিস্ফোরক অভিযোগ বিজেপি সাংসদের]
সিকিমে অভিযানের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দাওয়া ভুটিয়া নামে এক মোর্চা কর্মীর মৃত্যু হয়। দাওয়ার দেহ কালিম্পংয়ে এনে মিছিল করতে চায় মোর্চা। এই নিয়ে যাতে নতুন করে অশান্তি না হয় তার জন্য সতর্ক প্রশাসন। এদিকে শাস্তি পাওয়া মোর্চা নেতা বিনয় তামাংয়ের নিরাপত্তা বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। নিজের বাড়িতে বসে দলীয় নেতৃত্বর দিকে নতুন করে তির ছুড়েছেন বিনয়। মোর্চার নেতার দাবি তাঁর বিরুদ্ধে বিকিয়ে দেওয়ার যে অভিযোগ উঠছে তা অপপ্রচার। এই অভিযোগ যাঁরা করছেন তাঁরা প্রমাণ করতে না পারলে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই নেতা। বিনয়ের সংযোজন, বিমল গুরুং আড়ালে থাকার সময় তিনি ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন। নতুন দল গড়ার কোনও ইচ্ছে নেই তাঁর। পাহাড় অন্যত্র শুনশান হলেও তৃণমূল প্রভাবিত মিরিকে জনজীবন কিছুটা ছন্দে ফিরেছে। এদিন পুরসভায় এসে পুরপ্রধান লালবাহাদুর রাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেন। তবে বিমল গুরুংয়ের এই ভোলবদলে পাহাড়জুড়ে নানা কৌতুহল। দলের নেতাদের পরপর গ্রেপ্তারিতে কি মোর্চা সুপ্রিমো ভয় পেয়েছেন। তার জেরে রাজ্যের ডাকা বৈঠকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত। এর উত্তর খুঁজছেন পাহাড়বাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.