চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ফেসবুক থেকে বন্ধুত্ব তারপর প্রেম। সেই প্রেমের টানে সুদূর ইউরোপ থেকে আসানসোলে উড়ে এসে সোজা বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন স্পেনের বাসিন্দা সমাজকর্মী ওয়ালি ভেরোনিকা। আসানসোলের ঘাঘরবুড়ি মন্দিরে সাত পাকে বাঁধা পড়লেন কুলটির যুবক হ্যাপি ও মাদ্রিদের ভেরোনিকা। এই প্রথম আর্ন্তজাতিক পাত্র-পাত্রীর বিয়ের সাক্ষী থাকল মা ঘাঘরবুড়ি মন্দির। রীতিমতো হিন্দুমতে মেনে শুভ বিবাহ সম্পন্ন হল দুজনের।
কুলটি রানিতলার বাসিন্দা বালি ব্যবসায়ী প্রদীপ ভগতের ছোট ছেলে হর্ষ ওরফে হ্যাপি। ভেরোনিকা স্পেন থেকে একাই চলে আসায় বিয়ের সময় তাঁর আত্মীয় পরিজন ছিল না। তাই এদিন মন্দিরে হ্যাপির বন্ধু সাঙ্কি সিং কন্যাদান করেন। জানা গিয়েছে, ৮ বছর আগে সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকের মাধ্যমে ভেরোনিকার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় হ্যাপির। ব্যবসার সূত্রে হ্যাপির বিদেশে যাতায়াত ছিল। সেই সূত্র ধরে মাদ্রিদে একে অপরের সঙ্গে দেখা করেন। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব বদলে যায় প্রেমে। ভেরোনিকাও এর আগে এদেশে আসেন হ্যাপির সঙ্গে দেখা করতে। হ্যাপি ভেরোনিকাকে কলকাতায় ঘুরিয়েছেন। হ্যাপির পরিবারের লোকরা ভেরোনিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিলেও ভেরোনিকার পরিবার পারেনি। শনিবারই ভেরোনিকা চলে আসেন আসানসোল। মনোজ সিনেমা হলের কাছে একটি হোটেলে তিনি ওঠেন।
রবিবার পুরো ভগত পরিবার চলে আসে ঘাঘরবুড়ি মন্দির। লাল শাড়ি পড়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসে ভেরোনিকা। হিন্দুরীতি মেনে তাঁদের বিয়ে হয় এদিন। মন্দিরে বিয়ে দেন পূজারি সানু চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের বিয়ে আমি প্রথম দিলাম। বিয়ে দেখতে ভিড় জমে যায় মন্দির চত্বরে। বিয়ের পর বিদেশি বউমাকে নিয়ে কুলটি পাড়ি দেয় ভগত পরিবার। ভেরোনিকা জানান, তিনি হ্যাপিকে দিনের পর দিন বুঝেছেন। বোঝাপড়া ঠিকঠাক হওয়াতেই তিনি বিয়ে করেছেন। ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী? এখনই জানা নেই নবদম্পতির। আপাতত চিরকুণ্ডায় দাদার ফ্ল্যাটে থাকবেন তাঁরা। তবে স্পেন ‘শেনজেন কান্ট্রি’ হওয়ায় সেখানকার নাগরিকত্ব পাওয়া খুব কঠিন নয়। ভেরোনিকা ইউরোপিয়ান তাই তাঁর সঙ্গে বিয়ের পরেই ইউরোপের ৩২টা দেশে বিনা ভিসায় অনায়াসে যেতে পারবেন ও কাজ করতে পারবেন হ্যাপি। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে স্বামী-স্ত্রী স্পেনেও থাকতে পারেন বলে মনে করছে পরিবারের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.