নন্দন দত্ত, সিউড়ি: সৌভিক আত্মসমর্পণ করলে তার বাবাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। এই শর্তে আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে জঙ্গীপুরে পুলিশের সামনে হাজির হয় সৌভিক। কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিয়েও পুলিশ কথা রাখেনি বলে অভিযোগ তার পরিবারের। কারণ এখনও পুলিশ সৌভিকের বাবা অমিতাভ বণিককে আটক করে রেখেছে। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সৌভিকের নিকট আত্মীয় এবং আইনি পরামর্শদাতারা। এদিকে সোমবার দিনভর নিহত বন্ধু প্রকাশ পালের শ্বশুর বাড়ির সদস্য এবং তার বাবাকে জেরা করে সিআইডির প্রতিনিধি দল। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তৃণমূল নেতাকে।
গত শুক্রবার বিকেলে সৌভিকের খোঁজে রামপুরহাটে আসে লালবাগ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বরুণ বৈদ্য। সৌভিকের বাড়িতে গিয়ে তার ঘর থেকে বেশ কিছু কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করে। সেই সঙ্গে সৌভিককে না পেয়ে তার বাবা অমিতাভ বণিককে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপরেই বাবাকে নিয়ে সৌভিকের সিউড়ি অরবিন্দ পল্লির ভাড়া বাড়িতে পৌঁছায় মুর্শিদাবাদ পুলিশ। সেই খবর আগাম পেয়ে ভাড়া বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায় সে। সেখান থেকে সোজা রামপুরহাটে চলে আসে। এদিকে পুলিশ সৌভিককে না পেয়ে পুলিশ তার বাবাকে মুর্শিদাবাদ নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে পরিবারকে জানিয়ে যায় ছেলেকে হাজির করালে বাবাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। সেই শর্তে পরিবারের সদস্যরা তাকে ভোরের দিকে জিয়াগঞ্জ থানায় পৌঁছে দেয়। কিন্তু সৌভিককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরও তার বাবাকে ছাড়া হয়নি বলে অভিযোগ। মাঝে মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার কথা বললেও পুলিশ সেই কথা রাখেনি। আবার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করে আদালতের সামনে হাজির করা হচ্ছে না।
এদিকে সোমবার সকালে নিহত শিক্ষকের স্ত্রী বিউটি মণ্ডলের বাড়িতে আসে সিআইডির চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। নেতৃত্ব দেন বি এন ঘোষ নামে এক পদস্থ অফিসার। তারা প্রথমে সিউড়ি গ্রামে গিয়ে বিউটির দাদু বাদল মণ্ডল, মা চন্দনা মণ্ডল, ভাই টুবাই মণ্ডল এবং মাসতুতো ভাই অভিজিৎ মণ্ডলদের। তদন্তকারী অফিসাররা বিউটির সঙ্গে সৌভিকের সম্পর্ক এবং মেলামেশা কোন পর্যায়ের তা জানতে চান। কতদিন ধরে সৌভিকের সঙ্গে তার পরিচয় সে সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হয়। যদিও টুবাই তদন্তকারী অফিসারদের জানিয়ে দেন মেলামেশার বিষয়টি তাদের জানা নেই। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে অফিসারদের জানানো হয়েছে, বিশ্বকর্মা পুজোর আগে বিউটি ও বন্ধু প্রকাশ এসে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে যায়। সেই টাকা জঙ্গিপুরের বাড়ি থেকে মিললেও প্রায় ১৩ ভরি সোনার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যের দিকে তদন্তকারী অফিসাররা রামপুরহাট শ্রীফলা রোডে বন্ধুপ্রকাশের বাবা অমর পালের বাড়িতে যায়। তাকেও দীর্ঘক্ষণ জেরা করে। এরপর তদন্তকারী অফিসাররা যান অমর পালের বাড়ির সামনে তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনের বাড়িতে। একঘণ্টা তাকেও অমর পালের পরিবার সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জানতে চান। আনারুল হোসেন বলেন, “অমর পাল প্রতিবেশী হওয়ায় তার সম্পর্কে কিছু তথ্য জানতে চাইছিলেন অফিসাররা”।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.