সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত উত্তরবঙ্গ। স্রেফ এই অভিযোগ তুলেই উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য কিংবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি তুলে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি (BJP) সাংসদ জন বার্লা। তা নিয়ে বিজেপির অন্দরেই মতানৈক্য তৈরি হয়েছে। দলের কেউ কেউ তাঁকে সমর্থন করেছেন, কেউ আবার বিরোধিতা। এসবের মাঝেই নতুন করে বিতর্ক উসকে দিলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ তথা যুব মোর্চা সভাপতি সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan)। আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে যোগাভ্যাসের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনুন্নয়ন নিয়ে বার্লার দাবিকে সমর্থন জানালেন তিনি। বললেন, ”রাঢ়বঙ্গও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। এখানকার কোনও যুবকের চাকরি হয় না। এখানকার সম্পদ নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। কিন্তু উন্নয়নের লেশমাত্র নেই। এখন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি উঠতেই পারে।”
‘বঙ্গভঙ্গ’ চাইছে বিজেপি। জন বার্লার দাবির পর থেকে এই অভিযোগে সরব শাসকদল তৃণমূল (TMC)। দলের নেতারা এর বিরোধিতায় তীব্র সমালোচনায় মুখর। এই অবস্থায় সৌমিত্র খাঁ’র দাবি ঘিরে আরেকপ্রস্ত বিতর্কের অবকাশ তৈরি হল। তিনি বলেন, ”পশ্চিমবঙ্গবাসী হিসেবে বলব, মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে ‘বহিরাগত’ শব্দ’টি এনেছেন, তাতে এই দাবি উঠবেই। কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ২৩ জন মন্ত্রী রয়েছেন। আমাদের এলাকার মানুষ বঞ্চিত। রাঢ়বঙ্গের যুবকদের চাকরি নেই। আমাদের এলাকার সম্পত্তি রাজ্যের কোষাগারে যাচ্ছে। আমরা কিছু পাচ্ছি না। আগামী দিনে রাঢ়বঙ্গ থেকেও পৃথক রাজ্যের দাবি উঠবে।” অর্থাৎ যে কোনও বঞ্চনার শিকার হলেই পৃথক রাজ্যের দাবি ওঠাকে যুক্তিসঙ্গত বলেই মনে করেন সৌমিত্র খাঁ।
জন বার্লার পর সৌমিত্র খাঁ। প্রায় একইসুরে অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলে পৃথক রাজ্যের দাবিতে বিজেপির একের পর এক নেতার বক্তব্য নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। তার মধ্যে রবিবার, ২০ জুন তাদের ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করা নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেছেন তৃণমূল নেতারা। ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ নয়, ‘বঙ্গভঙ্গ দিবস’ পালন করছে বিজেপি। ব্রাত্য বসুর খোঁচা, ”পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের কথা বলার পর কীভাবে বিজেপি আলাদা উত্তরবঙ্গ চাইতে পারে? নিজেদের মধ্যেই দ্বন্দ্ব রয়েছে বিজেপির, নিজেদের মধ্যেই দ্বিচারিতা।”
এ নিয়ে দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “পশ্চিমবঙ্গকে আমরা একটা রাজ্য হিসাবে দেখি। সেই রাজ্যের উন্নয়ন, পরিবর্তনের জন্য বিজেপি কাজ করছে। কর্মীদের ওপর যে অত্যাচার হচ্ছে কর্মীরা মার খাচ্ছে, সে নিয়ে কেউ কেউ এ কথা বলছে। এর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.