রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: কাঁথি থানায় হাজিরা দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। একাধিক টালবাহানার পর অবশেষে শুক্রবার সকালে কাঁথি থানায় পৌঁছন তিনি। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। যদিও সৌমেন্দু অধিকারীর কাছে সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ রয়েছে। আর সেই রক্ষাকবচ অনুযায়ী পুলিশ তদন্ত করতে পারবে। তবে সৌমেন্দুকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, কাঁথি পুরসভার দু’ বারের পুরপ্রধান ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। পুরপ্রধান থাকাকালীন একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। একের পর এক মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে কাঁথি থানার পুলিশ। কাঁথি পুরসভার শ্মশানে স্টল দুর্নীতি মামলা, সারদায় লক্ষ লক্ষ টাকা দুর্নীতি, ত্রিপল চুরির মতো অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়। পুলিশ সৌমেন্দু অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের নোটিস দেয়। তবে সেই নোটিশের পরে হাজিরা দেননি সৌমেন্দু। কলকাতা হাই কোর্টের রক্ষাকবচের ভিত্তিতে বারবার হাজিরা এড়িয়ে যান।
প্রসঙ্গত, কাঁথি শ্মশানের জন্য বরাদ্দ জায়গায় জোর করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে হাই কোর্টে একটি মামলা চলছে। সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে তিনটি এফআইআর দায়ের হয়েছিল। গত ১১ আগস্ট কলকাতা হাই কোর্টের একটি অন্তবর্তীকালীন নির্দেশে রক্ষাকবচ পান। তার মাঝে কাঁথি থানার পুলিশ তাঁকে ডেকে পাঠায়। এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর সেই সমনের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সৌমেন্দু। সেসময় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা তাঁকে ফের রক্ষাকবচ দেন। দশমীর পর সৌমেন্দুকে ফের তদন্তকারীরা ডাকতে পারবেন বলে আদালতের তরফে জানানো হয়। এরপর দ্বাদশীতে কাঁথি থানায় হাজিরা সৌমেন্দুর।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “সৌমেন্দু অধিকারীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে না পুলিশ। আজ তাঁর সময় হয়েছে তাই গিয়েছেন। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ হচ্ছে। শুভেন্দু বলছে ও বিজেপিতে গিয়েছে বলে এসব হচ্ছে। মনে করিয়ে দিলাম, আমি ২০১৩ সালে এই অভিযোগ তুলেছি, ও যখন তৃণমূলে। শুভেন্দু জেনেশুনে মিথ্যাচার করছে। আমি তখন বলেছিলাম বলেই আমায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। শুভেন্দু বড় বড় কথা বলছে। এখন আবিষ্কার হচ্ছে শুভেন্দুর কথায় কাঁথিতে গিয়েছিলেন সুদীপ্ত সেন। সুদীপ্ত সেন বলছেন ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন শুভেন্দু। ও মেদিনীপুরের মুকুটহীন সম্রাট হয়ে পুলিশকে প্রভাবিত করে এই মামলায় নিজেকে বাইরে রেখেছিল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.