ধৃত সৎ বাবা। ছবি: বিশ্বজিৎ নস্কর
দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সৎ বাবার বিরুদ্ধে অসহনীয় অত্যাচারের অভিযোগ। অভিমানে স্কুলে গিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করল ন’বছরের শিশুকন্যা। শিশুকন্যার বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার চমকে দেওয়া ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের কোদালিয়ায়। যদিও মায়ের দাবি পড়াশোনা না করার জন্যেই সামান্য মারধর করা হত। বিশ্বাস না হলে প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসা করার কথাও বলেন তিনি।
জানা গিয়েছে, এদিন স্কুলে গিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে ওই শিশুকন্যা। তখনই শিক্ষিকাদের নজরে পড়ে যায় দৃশ্যটি। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে শিশুকন্যার বাবা ও মাকে গ্রেপ্তার করেছে। শিশুটির মা কাজ করেন। সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তাঁর ফিরতে রাত হয়। অন্যদিকে কিছুই করেন না শিশুটির সৎ বাবা। সারা দিন বাড়িতে থেকে শিশুকন্যাকে খাওয়ানো, স্নান করানো থেকে যাবতীয় কাজ তিনিই করেন। এমনটাই দাবি করেছেন শিশুকন্যার মা। এদিকে গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত শিক্ষিকারা।
এই প্রসঙ্গে শিশু সুরক্ষা কমিটির তরফে অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, শুধু বাবা-মা হওয়ার শারীরিক ক্ষমতা থাকলেই হয় না। সন্তান পালন করা একটি বিরাট দায়িত্বের ব্যাপার। সেই দায়িত্ব আদৌ পালন করতে পারবেন কি না তা দেখেই সন্তানকে পৃথিবীতে আনা উচিত। শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে গেলে আমাদের চিন্তাধারায় বদল আনতে হবে। স্কুলে নয়, শিশু সবথেকে বেশি নির্যাতিত হতে পারে তার বাড়িতে। মারধরের পাশাপাশি যৌন নির্যাতনও এই তালিকায় পড়ছে। আমাদের সমাজে শিশুকন্যাদের উপরে এক ধরনের চাপ তৈরি করেন বাবা-মা। শিশুপুত্রের উপরে অন্য এক ধরনের চাপ তৈরি করেন। এই দ্বৈত চাপে শিশুদের মানসিক পরিস্থিতি কি হচ্ছে তা কিন্তু ভাবনা চিন্তাতেই আনা হয় না। এই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া শিশুকন্যার সঙ্গে কি ধরনের অত্যাচার হয়েছে তা আগে দেখা দরকার। তারপরেই সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, শিশু কন্যার অভিযোগ সৎ বাবা তাকে যখনতখন মারধর করে। মা বাড়ি ফিরলে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। উলটে মা বকে। দিনের পর দিন অত্যাচার চলতে থাকায় আত্মহননের পথ বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.