সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ঘুম ভাঙা ভোরে উঁচু বাড়ির জানলায় চোখ রাখলে দামোদরের ওপারে সবুজ বিহারীনাথ, একটু পাশে পাঞ্চেত পাহাড়। রাঢ় বাংলার বাতাসে এখন হিলহিলে মাদকতা। চৈত্রের লাল পলাশের আমোদ আরও বাড়াতে ভোটমুখী আসানসোলে পা রাখছেন বলিউডের গ্ল্যামার কুইন সোনাক্ষী সিনহা। ঐতিহাসিক এই শহরে বেশ কয়েকদিন থাকবেন শত্রুঘ্নকন্যা। বাবার জন্য প্রচার করতে বেশ কয়েকদিন এখানে থাকতে চান তিনি।
বছর পাঁচেক আগে কলকাতার রাস্তায় হাতে টানা রিক্সায় চাপতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। শুটিংয়ের কাজে শহরে কয়েকদিন থেকেওছিলেন সোনাক্ষী। বাংলার আতিথেয়তা মুগ্ধ করেছিল তাঁকে। বাবুল সুপ্রিয় ইস্তফা দেওয়ায় এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মনোনয়ন দিয়েছেন শত্রুঘ্নকে। যিনি নিজেই জনপ্রিয় তারকা। বাবা-মেয়ের যুগলবন্দিতে আরও তপ্ত হতে চলেছে আসানসোল। আসানসোল লোকসভার এই উপনির্বাচনের দায়িত্বে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। প্রায় প্রতিদিন শত্রুঘ্নর (Shatrughan Sinha) সঙ্গে কথা হচ্ছে মলয়ের। মনোনয়ন পর্বের আগেই মাঠে নেমেছে তৃণমূল। দেওয়াল লেখা, পোস্টারিংয়ের কাজ শুরু করে দিয়েছেন আসানসোলের তৃণমূল কর্মীরা। মলয় জানাচ্ছেন, “দলের কর্মীরা তুমুল চাঙ্গা। শত্রুঘ্নর সঙ্গে কথা হয়েছে। বাবার হয়ে প্রচারে আসছেন সোনাক্ষী।” শত্রুঘ্ন সিনহা মলয় ঘটককে আরও বলেন তিনি দিন দুয়েকের মধ্যে আসানসোলে আসবেন। ভোটে লড়াই করতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া থেকে প্রচার- সবকিছুতেই অংশগ্রহণ করবেন।
১২ এপ্রিল আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। ভোট গণনা হবে এপ্রিলের ১৬ তারিখে। ১৫ এপ্রিল পয়লা বৈশাখের সূচি বাতিল করেছেন স্থানীয় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। ১৭ মার্চ থেকে আদর্শ আচরণবিধি শুরু হয়ে যাবে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৪ মার্চ। ২০১৯-এ এই কেন্দ্র থেকে জয় পেয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। তৃণমূলকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য সাংসদ হন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদ পেয়েছিলেন। পরে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেয় বিজেপি। দল এবং সাসংদ পদ ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন বাবুল। বালিগঞ্জ কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে তাঁকে টিকিট দিয়েছে তৃণমূল। তাঁর জায়গায় কাকে প্রার্থী করা হবে তা নিয়ে ছিল তুমুল কৌতূহল। তৃণমূলনেত্রী নিজে বেছে নেন শত্রুঘ্নকে। তাঁর হয়ে অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেন এক মন্ত্রী। শত্রুঘ্ন তখন দেরাদুনে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছার কথা জানার সঙ্গে সঙ্গে সম্মতি জানান ‘বিহারি বাবু’।
আসানসোলে তারকাদের থাকার একাধিক হোটেল আছে। তবে শত্রুঘ্ন তৃণমূলের মন্ত্রীকে জানিয়েছেন, তিনি সাধারণ মানুষের মত ঘরোয়া পরিবেশে থাকতে চান। খনি ও ইস্পাতের শহরে তাই তারকা প্রার্থীর জন্য চলছে ঘরের খোঁজ। সোনাক্ষী এসেও থাকবেন সেই ঘরে। প্রাচীন শহর আসানসোলের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে ইতিহাস। মুঘল থেকে ব্রিটিশ আমলের বহু স্থাপত্য চোখ জুড়িয়ে দেয়। তৃণমূল নেতাদের ইচ্ছা চোখ জুড়নো প্রকৃতীর মাঝে রাখা হোক বাবা-মেয়েকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.