দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি : দীর্ঘ দুবছর পর মাকে ফিরে পেল পাঁচ বছরের সায়ন। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ভিন রাজ্যে চলে গিয়েছিলেন বন্দনাদেবী। স্মৃতিও হারিয়েছিলেন। কিন্তু আবছা-আবছা বাড়ির কথা মনে পড়ত। মনে পড়ত ছেলের কথাও। কিন্তু মনের মধ্যে সেই ছবি কখনোই স্পষ্ট হত না। তবে পুরানো কথা মনে পরার পর আর এক মুহূর্ত দেরি করেননি বন্দনাদেবী।শেষপর্যন্ত বৃহস্পতিবার আরামবাগে বন্দনা ও তার ছেলে সায়নের পুনর্মিলন হয়। এদিন দেখা হতেই ছেলেকে জড়িয়ে ধরে চুমুতে ভরিয়ে দিলেন বন্দনা। ছেলেও মায়ের কোলে তার নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পেয়ে অনেকটাই নিশ্চিন্ত।
দুই বছর আগে আরামবাগ থেকে নিঁখোজ হয়ে য়ান বন্দনাদেবী।কিন্তু কী করে কোরাপুট চলে গেলাম তা এখনও মনে করতে পারছেন না তিনি।বন্দনা জানান, “রাস্তায় বেরিয়ে কী করে উড়িষ্যার কোরাপুটে পৌঁছে গিয়েছিলাম তা মনে নেই। কিন্তু সেখানকার হোমে থাকাকালীন বাড়ির কথা কিছুতেই মনে পড়ছিল না।” জানা গিয়েছে, মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। ওড়িশার কোরাপুটের প্রশাসনিক কর্তারা তাঁকে উদ্ধার করেন। সেখানে একটি হোমে রাখা হয়েছিল তাঁকে। চলছিল চিকিৎসাও। সেই চিকিৎসায় সাড়া দিতেই ধীরে ধীরে পুরনো কথা মনে পড়তে শুরু করে তাঁর।
বাড়ির ঠিকানা মনে পড়ল তখন থেকেই বাড়ির ফেরার উতলা হয়ে ওঠে। কোরাপুট থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নিজের ছেলেকে দেখতে পেয়ে বন্দনার বাড়ি ফেরার আকুলতা আরও বেড়ে যায়।শেষমেশ বৃহস্পতিবার ছেলেকে ফিরে পেলেন বন্দনা দেবী। মেয়েকে হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে ট্রমার মধ্যেই কাটিয়েছেন বন্দনাদেবীর মা পদ্মাদেবীও।বৃহস্পতিবার মা ও ছেলেকে কাছে পেয়ে খুশি বন্দনা। অন্যদিকে বন্দনার মা পদ্মা পন্ডিত মেয়েকে ফিরে পেয়ে খুশি।
এদিকে মাকে কাছে না পেয়ে ছেলে সায়নও কিছুটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। সেজন্য হুগলি জেলা আইনি পরিষেবার পক্ষ থেকে ছেলেটির যাতে চিকিৎসা হয় তার ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানান হুগলি জেলা বিচার সচিব অনির্বাণ রায়। বন্দনা নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। হাতের লেখাও মুক্তোর মতো। সে আরামবাগে ফিরে গিয়ে ছেলেকে পড়াশোনা শেখাতে চায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.