ছবি: প্রতীকী
রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: বউয়ের উপর নিয়মিত অত্যাচার (Torture) করে মা। সেই রাগে নিজের মাকে গলা টিপে খুনের পর মৃতদেহ বাড়িরই সেফটি ট্যাঙ্কে ফেলে দিল গুণধর ছেলে! তবে এভাবে দেহ লোপাট করেও শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশ শনিবার ওই গুণধর ছেলে বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করেছে। বাপ্পার স্ত্রী ডলি পাল চট্টোপাধ্যায়কেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) ফালাকাটা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দেশবন্ধু পাড়ার এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ফালাকাটা থানার আইসি (IC) সমিত তালুকদার বলেন, “আমরা মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছি। মূল অভিযুক্ত বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। শ্বাসরোধ করে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। খুনের কথা স্বীকার করেছে ছেলে বাপ্পা। কবে, কখন, কেন এই খুনের ঘটনা ঘটে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুনে (Murder) অভিযুক্ত ছেলে বাপ্পা দুটো বিয়ে করেছে। আগের বউয়ের সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গেছে। তিন মেয়ে-সহ পরের বউ ডলিকে বিয়ে করে বাপ্পা। বাপ্পার সঙ্গে বরাবর তার মা মায়া চট্টোপাধ্যায়ের বিবাদ লেগেই থাকত। বাপ্পা নিয়মিত অভিযোগ তুলতেন যে আগের বউকে অত্যাচার করে উনি তাড়িয়েছেন। দ্বিতীয় বউ ডলির উপরও মা অত্যাচার করেন বলে বাপ্পার অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার রাতে মা-ছেলের দু’জনের বিবাদ বাঁধলে গলা টিপে মাকে খুন করে বাপ্পা। তারপর মৃতদেহ বাড়ির সেফটি ট্যাঙ্কে ফেলে দিয়ে ঢেকে দেয় সে। খুনের সময় স্ত্রী ও তিন মেয়ে মহাকাল বাড়িতে মামার বাড়িতে ছিল। খুন করার পর রাতেই সেখানে চলে যায় বাপ্পা। কিন্তু শুক্রবার শ্যালক লব পালকে নিজেই খুনের ঘটনা জানিয়ে দেয় বাপ্পা। আর তারপর শ্যালক পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ শনিবার সকালে অভিযান চালিয়ে বাড়ি থেকে বাপ্পাকে গ্রেপ্তার করে। রবিবার বাপ্পাকে আদালতে পেশ করবে পুলিশ।
এই ঘটনায় প্রতিবেশীরা তাজ্জব বনে গিয়েছেন। ফালাকাটা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনোজ সাহা বলেন, “আমরা ঘটনা আগে জানতেই পারিনি। পুলিশ বাপ্পাকে গ্রেপ্তার করার পর আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। আসলে মাত্র দু’দিন ওই মহিলাকে কেউ না দেখতে পায়নি বলে কারও তেমন কোনও সন্দেহ হয় নি। ঘটনা শুনে আমরা তাজ্জব বনে গিয়েছি।“
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.