ধীমান রায়, কাটোয়া: বসত ভিটে নিজের নামে লিখিয়ে নিয়ে বৃদ্ধ বাবাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। ভিটেছাড়া বৃদ্ধের ঠাঁই আপাতত মেয়ের শ্বশুরবাড়ি। শুধু তাই নয়, মেয়ের বাড়িতে থাকাকালীন অসহায় বৃদ্ধ নিজের শেষ সম্বল কিছু জিনিসপত্র ও নথিপত্র আনতে গিয়েছিলেন বাড়িতে। অভিযোগ, সেসব জিনিসপত্র এবং ভোটার ও রেশন কার্ড আটকে রেখে ফের মারধর করে বৃদ্ধকে বের করে দিয়েছে ছেলে-বউমা। অবশেষে নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে বৃদ্ধ পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।
কাটোয়ার বাঁধমুড়া গ্রামের বাসিন্দা সুরাত মল্লিক (৬১) নামে ওই বৃদ্ধ শুক্রবার কাটোয়া থানায় তাঁর ছেলে ফিরোজ মল্লিক ও পুত্রবধূ আনারকলি বিবির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কাটোয়ার বাঁধমুড়া গ্রামের বাসিন্দা সুরাত মল্লিক ছিলেন প্রান্তিক কৃষক। তাঁর তিন সন্তান। মেয়ে মমতাজের অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট ছেলে গোলাপ নিজে বাড়ি করে পৃথকভাবে বসবাস করেন। সুরাতবাবু জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী রহিমা বিবি প্রায় ১০ বছর আগে মারা গিয়েছেন। সেই থেকে বড় ছেলে ফিরোজের কাছেই থাকতেন বৃদ্ধ। তাঁর কথায়, বড় ছেলে ফিরোজ ও পুত্রবধূ তাঁকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বাড়িটি নিজেদের নামে লিখিয়ে নেন।
সুরাতবাবুর কথায়, “বড় ছেলে ও বউমা আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ওরা আজীবন আমার দায়িত্ব নেবে। এই প্রতিশ্রুতি পেয়েই বাড়িটি ফিরোজের নামে লিখে দিই। কিন্তু বাড়ি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার পর থেকেই আমার উপর অত্যাচার শুরু হয়। গত এপ্রিল মাসে আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় ওরা।” তিনি আরও বলেন, “ছেলে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পরে আমি মেয়ের বাড়ি মুল্টি গ্রামে চলে যাই। আমার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও কিছু জিনিসপত্র বাড়ির একটি ঘরে বড় বাক্সের মধ্যে রাখা ছিল। মাঝে পঞ্চায়েতের মধ্যস্থতায় ঠিক হয়েছিল ওই সমস্ত জিনিসপত্র ও কাগজপত্র আমাকে ফিরিয়ে দেবে। আমি মেয়ের বাড়ি থেকে গত ১২ জুন বাঁধমুড়া গ্রামে সেসব জিনিসপত্র আনতে যাই। কিন্তু ওরা সেসব না দিয়ে লোকজন জড়ো করে আমাকে মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছে।”
প্রহৃত হওয়ার পর সুরাত মল্লিক বেশ কয়েকদিন চিকিৎসাধীনও ছিলেন তিনি। এরপর একটু সুস্থ হতেই কাটোয়া থানার দ্বারস্থ হন বৃদ্ধ। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এভাবেই একের পর এক ঘটে চলেছে বৃদ্ধ, বৃদ্ধাদের অবহেলার ঘটনা। হাজার আইনের বাঁধন দিয়েও যার সমাধান অধরাই৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.