শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: নেশা ছাড়াতে প্রায় দিনই বাবার সঙ্গে ঝগড়া করতেন বড় ছেলে। কিন্তু লাভ হয়নি। শেষে সেই নেশার নিয়ে ঝগড়ার চোটেই প্রাণ গেল প্রৌঢ়ের। ছেলের বাঁশের ঘায়ে মাথা ফেটে চৌচির হয়ে গেল তাঁর। উঠোনে পড়ে থাকা রক্তাক্ত প্রৌঢ়কে উদ্ধার করতে এগিয়ে এসেছিলেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু ছেলের বাধায় তা সম্ভব হয়নি। ফলে সোমবার জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার মণ্ডল ঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের ঠাকুরের কামাত এলাকায়বাড়ির উঠোনেই প্রাণ গেল প্রৌঢ়ের। অভিযুক্ত ছেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সড়ব হয়েছেন পাড়া প্রতিবেশীরা।
অভিযোগ, একের পর এক আঘাতে বাবা মানিক রায় (৫২) উঠোনে লুটিয়ে পড়লে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য এগিয়ে গিয়ে ছিলেন পাড়া প্রতিবেশীরা। কিন্তু উদ্ধার করতে দেয়নি ছেলে সঞ্জয় রায় (২৮)। উঠোনেই পড়ে থেকে মৃত্যু হয় তাঁর বাবার। খুনের অভিযোগে ছেলে সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, মানিক রায় পেশায় রাজমিস্ত্রী। আয়ের বেশির ভাগ টাকাই নেশার পিছনে খরচ করতেন তিনি। এনিয়ে পরিবারে নিয়মিত অশান্তি লেগেছিল। তাঁর তিন ছেলে। বড় ছেলে শিলিগুড়িতে ঠিকাদারি সংস্থায় শ্রমিকের কাজ করেন। বাড়িতে এলে তাঁর সঙ্গে বাবার প্রায় প্রতিদিনই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। প্রতিবেশী সুরজিৎ বিশ্বাস জানান, এদিনও সকাল থেকে বাপ-ছেলের গণ্ডগোল চলছিল। দুপুরে তা চরমে ওঠে। অভিযোগ, বাবাকে উঠোনে বেধে বাঁশ দিয়ে পেটাতে থাকে ছেলে। একের পর এক আঘাতে লুটিয়ে পড়েন মানিক। তাঁর চিৎকার শুনে প্রতিবেশী অনেকেই উদ্ধার করতে ছুটে যান। অ্যাম্বুল্যান্স ও ডেকে আনা হয়।
আরেক প্রতিবেশী দিলীপ রায় অভিযোগ করেন, ছেলে সঞ্জয় বাড়ির ভিতরে কাউকে ঢুকতে দেননি। তাঁর উগ্রমূর্তি দেখে কেউ আর সাহস করে ভিতরে ঢোকেননি। পরে তাঁরাই পুলিশকে খবর দেন। কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার জানান, পারিবারিক অশান্তির জেরে এই ঘটনা বলে প্রাথমিক তদন্তে তাদের অনুমান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.