সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মতুয়া মহাসংঘের অন্দরের ভাঙন নতুন কিছু নয়। বনগাঁর ঠাকুরবাড়িতে আড়াআড়ি ভাগ দুই গোষ্ঠীর। সেখানে স্পষ্ট রাজনীতিও। দুই শিবির দুই রাজনৈতিক দলের সমর্থক। একদিকে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর, অন্যদিকে বিজেপির বর্তমান সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া ভক্তরাও সে অর্থে খানিক দ্বিধাবিভক্ত। তাতে সমস্যা বাড়ছে বই কমছে না। বিপদ বুঝে এবার ভক্তদের একজোট করার উদ্যোগ নিলেন মতুয়া মহাসংঘের যুগ্ম সংঘাতিপতি সুব্রত ঠাকুর। সম্পর্কে যিনি শান্তনু ঠাকুরের ভাই। অস্ত্র হিসেবে হাতে তুলে নিলেন মতুয়া মহাসংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর এবং হরিচাঁদ ঠাকুরের প্রতি কুৎসা রটনার অপপ্রচারকে। ফেসবুকে একটা দীর্ঘ পোস্ট করে তিনি এ সম্পর্কে সকলকে সচেতন করেছেন।
সুব্রত ঠাকুর লিখেছেন যে, বেশ কয়েকদিন ধরে মতুয়া মহাসংঘের মূল প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর এবং গুরুচাঁদ ঠাকুরকে নিয়ে কুৎসা রটানো হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে উল্লেখ করে অভিযোগ তুলেছেন, মতুয়াদের মধ্যে ভাঙন ধরাতে কোনও দুষ্ট চক্র এই কাজ করছে। এরপর সুব্রত ঠাকুর ধীরে ধীরে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করে কেন্দ্রের আনা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) মতুয়াদের নাগরিকত্ব প্রদানে কতটা কার্যকরী, তা ব্যখ্যা করেছেন।
মতুয়া ভক্তদের কাছে সুব্রত ঠাকুরের সতর্কবার্তা, কেউ বা কারা সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্ররোচনায় কেউ যাতে পা না দেন, সেই আবেদনও করেন মতুয়া মহাসংঘের যুগ্ম সংঘাতিপতি। তিনি লেখেন, ”আপনাদের অনুরোধ করছি, আপনারা গুজবে কান দেবেন না। এবং সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াবেন না।” যাঁরা এধরনের অপচেষ্টার পিছনে রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পথে লড়াই চলবে। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল পরীক্ষা করে ইতিমধ্যেই গাইঘাটা থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে নিজের পোস্টে জানিয়েছেন সুব্রত ঠাকুর।
তাঁর পোস্ট ঘিরে প্রশ্ন উঠছে। সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ তৈরির চেষ্টার অভিযোগ তুলে তাঁর ইঙ্গিত কি আসলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে? নাকি ঠাকুরবাড়ির অন্দরের কাউকেই দায়ী করতে চাইছেন সুব্রত ঠাকুর? এক্ষেত্রে সর্বপ্রথমে নাম উঠবে মমতাবালা ঠাকুরের। যিনি মহাসংঘের প্রাক্তন প্রধান বড়মা তথা বীণাপানি দেবীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এখানে আবার বড় হয়ে উঠবে সংঘের মূল রাশ ধরতে ক্ষমতার লড়াই। তবে এসব বাদ দিলেও, সুব্রত ঠাকুরের ঐক্যের বার্তা কম গুরুত্বপূর্ণ নয় মোটেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.