জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: লকডাউনের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় লেখাপড়ার নামও নেই এলাকার পড়ুয়াদের। দু-একজন অনলাইনে ক্লাস করতে আগ্রহী হলেও ইন্টারনেট পরিষেবার সমস্যার কারণে তাও কার্যত অসম্ভব। এই সমস্ত পড়ুয়াদের কথা ভেবে, তাঁদের লেখাপড়ায় সহযোগিতা করতে এগিয়ে এল বনগাঁর কলমবাগানের একটি ক্লাব। দুস্থ পড়ুয়াদের শুধু খাত-পেনই নয়, দিলেন ‘হোম ওয়ার্ক’ও। নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে তা দেখে আসবেন শিক্ষকরা। ক্লাব সদস্যদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বুধবার দিন দুপুরে কলমবাগানের সোনালি হালদার, কৌশিক দাস, উত্তম ভট্টাচার্যরা রান্না করে তা নিয়ে হাজির হন মুড়িঘাটার আদিবাসী পাড়ায়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আদিবাসী পরিবারগুলির হাতে খাবারের প্যাকেট তুলে দেন বনগাঁ থানার আইসি মানস চৌধুরি ও ক্লাবের সদস্যরা। এরপর তাঁরা পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাতা, পেন, চকলেট বিলি করে। সেইসঙ্গে তাঁদের পড়াশোনায় সাহায্য করে এলাকার সমস্ত পড়ুয়াদের হোম ওয়ার্ক দেন। শিক্ষক গৌতম ভট্টাচার্য পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যারা হোম ওয়ার্ক করে রাখবে, তিনদিন বাদে শিক্ষক পুনরায় এসে সেগুলি দেখে তাদের উপহার দেবেন৷” জানা গিয়েছে, লকডাউন যতদিন চলবে এভাবেই তিনদিন অন্তর ওই আদিবাসী পাড়ায় যাবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পড়ুয়াদের সাহায্য করবেন লেখাপড়ায়। এবিষয়ে শিক্ষিকা সোনালি হালদার, গৌতম ভট্টাচার্যরা বলেন, “বিভিন্ন শ্রেণির প্রায় ৭০ জন পড়ুয়া এই এলাকায় রয়েছে। আজকে তাদের লেখাপড়ার কাজ দিয়ে গেলাম। তিন দিন বাদে এসে সেগুলি দেখে নতুন করে পড়া দিয়ে যাব।”
বনগাঁ থানার মুড়িঘাটা গ্রামে বাস মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের। বেশিরভাগ মানুষই দিন আনেন দিন খান। সম্প্রতি এলাকায় চোলাই বিক্রির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছিল। বহু মানুষ এতে জড়িয়ে পড়ায় এলাকায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল৷ দিন কয়েক আগে বনগাঁ থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই গ্রামের চোলাইয়ের কারবার বন্ধ করে দেয়। এলাকা নেশা মুক্ত ও পঠন-পাঠনের উপযুক্ত রাখতে পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল খাদ্যসামগ্রীও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.