সৌরভ মাজি, বর্ধমান: পঞ্চম দিনের লকডাউন (Lockdown) চলছে বর্ধমান শহরে। তা সত্ত্বেও রবিবার পথে নামতে দেখা গেল অনেককেই। পুলিশ তাঁদের বেরনোর কারণ জিজ্ঞাসা করতেই নানান অজুহাত শোনা গেল। কেউ কেউ দিলেন হাস্যকর সাফাই। পুলিশ কর্তার কাছে পেলেন আরও হাস্যকর উত্তর। কেউ আবার বিয়ের পাত্রী দেখতে যাওয়ার জন্য গাড়িতে প্রেস স্টিকারও লাগিয়েছিলেন। লাভ হল না, ধরা পড়ে গেলেন পুলিশের কাছে।
এদিন শহরের বাদামতলা মোড়ে সিভিল ড্রেসে নজরদারি চালাচ্ছিলেন বর্ধমান থানার আইসি পিন্টু সাহা। বেশ কয়েকটি গাড়ি আটকান তিনি। “কেন বেরিয়েছেন লকডাউনের মধ্যে?” এই প্রশ্নের উত্তরে এক গাড়িচালক বললেন, “স্যর, লকডাউন চলছে না কি? জানতামই না তো।” যা শুনে পুলিশকর্তারও পালটা সরস জবাব, “কৃতার্থ করেছেন। গাড়ি ঘোরান।” মোড়ে মোড়ে মাইকে ঘোষণা হচ্ছে লকডাউনের, অথচ গাড়িচালকের দাবি যে উনি নাকি জানতেনই না। আজব যুক্তি!
এরপরই রাস্তায় উদয় হয় ‘PRESS’ স্টিকার লাগানো একটি গাড়ি। সেটিকেও আটকানো হয়। বেশ কয়েকজন সওয়ারি ছিলেন তাতে। ‘PRESS’ স্টিকার থাকলেও কোন সংবাদমাধ্যম, তার কোনও নথি দেখাতে পারেননি গাড়িচালক। বেগতিক বুঝে এরপর করজোড়ে অনুরোধ, “স্যর, পাত্রীর বাড়ি যাচ্ছি। বিয়ের দিন ঠিক হয়ে গিয়েছে। না গেলে অসম্মানের ব্যাপার।” এই উত্তর শুনে হেসে ফেলেন সকলেই। বেশ কিছুক্ষণ আটকে থাকার পর অবশ্য অনুনয়-বিনয়ে কাজ হয়েছে। মিলেছে পাত্রীর বাড়ি যাওয়ার ছাড়। এদিন শহরের বিভিন্ন জায়গায় মোট ১৪ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে লকডাউনের নিয়ম ভাঙার অভিযোগ।
বর্ধমান শহরে করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ খুব দ্রুত হারে বাড়ছে। বেশ কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের কাছে লকডাউন ঘোষণার মতো কড়া ব্যবস্থা না নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। লকডাউনে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া আর কিছুতেই ছাড় নেই। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বেরনোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বর্ধমান শহরের প্রায় প্রতিটি মোড়েই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ কর্তারাও পথে নেমে লকডাউন কেউ ভাঙছে কি না, তা নজরে রাখছেন। তাতেই এসব হাস্যকর যুক্তি শোনা গেল লকডাউন ভেঙে রাস্তায় নামা লোকজনের কাছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.