ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: আমফানের তাণ্ডবে ঘর বাড়ি হারিয়েছেন বহু মানুষ। প্রায় তিন সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি তাঁরা। অথচ কর্মাধক্ষ্য ও তাঁর অবস্থাপন্ন পরিবারের লোকেরা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সে ক্ষোভেই উত্তাল হয়ে ওঠে শাসনের দাদপুর অঞ্চল। সেই অভিযোগ নিয়ে এদিন দাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আসের আলির বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীদের একাংশ।
তাঁদের অভিযোগ, আসের আলি কর্মাধ্যক্ষর পাশাপাশি স্কুল শিক্ষকের চাকরি করেন। আমফানে তাঁর বাড়ির বিশেষ ক্ষতি হয়নি। অথচ তিনি ও অন্য আত্মীয়রা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। কিন্তু যাঁরা প্রকৃত অর্থে ক্ষতিগ্রস্ত তাঁরা ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি। এবিষয়ে আসের আলি মল্লিকের বক্তব্য, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। তাঁর বাড়ির ক্ষতি হয়েছে তাই তিনি ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। এই বিষয়ে দাদপুরের প্রধানের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে উপপ্রধান মহম্মদ আবদুল হাই জানান, এমন একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছে শুনেছি। তবে যাঁরা এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি তাঁদের ব্যাংকে কোনও সমস্যা আছে। তাঁরা প্রত্যেকেই ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ মে রাজ্যে আছড়ে পড়ে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান। ১৩৩ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে প্রায় লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় কলকাতা-সহ হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর। বহু মানুষ হারিয়েছেন বাড়ি। আবারও কোথাও ভেঙেছে গাছ। উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষত নিজে বাংলায় এসে খতিয়ে দেখে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তৎক্ষণাৎ ১ হাজার কোটি টাকা আর্থিক সহায়তাও করে কেন্দ্রীয় সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর্থিক সহায়তা করেন আমফান বিধ্বস্তদের। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, আমফান বিধ্বস্তরা পাচ্ছেন না আর্থিক সাহায্য। পরিবর্তে সেই টাকা আত্মসাৎ করছে শাসকদল। সেই অভিযোগ যদিও বারবার নস্যাৎ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তারই মাঝে সামনে এল দাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছে যাওয়ার ঘটনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.