Advertisement
Advertisement

সতীর পীঠ অট্টহাস সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানেন কি?

মূর্তি থেকে পরিবেশ, বৈচিত্রের নানা ঠিকানা।

Some amazing facts about famous Attahas Temple
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 12, 2017 11:13 am
  • Updated:October 12, 2017 1:45 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: কঙ্কালসার চেহারা। ফুটে উঠেছে বুকের পাঁজর। কান দুটি শরীরের তুলনায় বেশ বড়। বিস্ফারিত গোলাকার চোখ। আঁচড়ানো চুল পিঠের উপর পড়েছে। মুখগহ্বর থেকে বেরিয়ে রয়েছে কুকুরের মতো দুটি তীক্ষ্ণ দাঁত। মুখে হিংস্রতার ছাপ। বাম হাত মাটিতে ভর দিয়ে আর ডান হাত হাঁটুতে রেখে অদ্ভুত ভঙ্গিতে বসে আছেন দেবী। পাথরের উপর খোদাই করা হয়েছে এই সোওয়া এক ফুটের দন্তুরা চামুণ্ডার মূর্তি। শোনা যায় ওই মূর্তির চোখের ওপর কেউ বেশিক্ষণ চোখ রাখতে পারতেন না। এই কারণে কেতুগ্রামের অট্টহাসে আজও প্রকাশ্যে আনা হয় না দেবীর আসল রূপ। অন্তরালেই থাকেন অট্টহাসের দেবী দন্তুরা চামুণ্ডা। মূর্তির একটি আলোকচিত্র মহিষমর্দিনী মূর্তির পাশে রেখে পুজো করা হয়।

[বেগার খেটেই কালীপুজোয় ‘রাজঋণ’ শোধ করে মেটে সম্প্রদায়]

Advertisement

BDN-ATTAHAS.jpg-2

সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম কেতুগ্রামের অট্টহাস। পুরাণে বলা হয়, সতীর অধর অর্থাৎ ঠোঁটের নিম্নাংশ এই জায়গায় পড়েছিল। দেবী এখানে অধরেশ্বরী নামে পূজিতা হন। কেতুগ্রামের নিরোল বাসস্ট্যান্ড থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় জঙ্গলঘেরা  এলাকায় দেবী মন্দির। এর উত্তরে বয়ে গিয়েছে ঈশানী নদী। অদূরেই শ্মশান। শাস্ত্র বলে যে কোনও শক্তিপীঠের পাশে নদী ও শ্মশান থাকা আবশ্যক। অট্টহাস মন্দিরে রয়েছে একটি প্রাচীন শিলামূর্তি। যার পাথরের ওপর খোদাই করা সাপের চিহ্ন। তার পাশে একসময় ছিল মহিষমর্দিনীর অষ্টধাতুর মূর্তি। তবে ওই মূর্তি চুরি হওয়ায় কয়েক বছর আগে একটি প্রস্তর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। আর এই মূর্তির পাশে একটি ছবি রেখে পুজো করা হয়। যা অট্টহাসের আদি মূর্তি দন্তুরা চামুণ্ডার ছবি। আসল মূর্তি কোথায় গেল? জানা গিয়েছে, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সংগ্রহশালায় রয়েছে দন্তুরা চামুণ্ডার সেই মূর্তি। যা প্রায় ১০০ বছর আগে অট্টহাস থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

[কঙ্কালসার চেহারায় কালিকার আরাধনা বর্ধমানে]

ইতিহাসবিদ তথা লেখক ডঃ কালীচরণ দাস ও প্রবীর আচার্য এর কারণ অনুসন্ধান করেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য, অট্টহাসে দেবীর মূল মূর্তিটি দেবীর অষ্টচামুণ্ডা রূপের অন্যতম দন্তুরা চামুণ্ডা। এই মূর্তি ভারতবর্ষে সচরাচর দেখা যায় না। যার বয়স প্রায় সাড়ে তিনহাজার বছরেরও বেশি। ১৯১৫–১৬ সাল নাগাদ প্রখ্যাত ঐতিহাসিক নগেন্দ্রনাথ বসু বর্ধমান জেলার অট্টহাসে এসেছিলেন। এরপর দন্তুরা চামুণ্ডার মূর্তিটি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সংগ্রহশালায়। সেই থেকে সংগ্রহশালায় রয়েছে অট্টহাসের দন্তুরা চামুণ্ডা। মূলত কালীচরণবাবু ও প্রবীরবাবুর উদ্যোগে এই তথ্য সামনে আসে। তারপর থেকে দন্তুরা চামুণ্ডার একটি আলোকচিত্র সংগ্রহ করে মন্দিরে পুজো করা হচ্ছে। নির্জন জঙ্গলের মাঝে নিশুতি রাতে অট্টহাসের চামুণ্ডা পুজোয় রোমাঞ্চ উপভোগ করতে অনেক দর্শনার্থী ভিড় জমান। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা এখনও রাতের বেলায় এড়িয়ে চলেন অট্টহাস মন্দির।

ছবি: জয়ন্ত দাস  

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement