রাজা দাস, বালুরঘাট: বিদ্যুৎ ও অন্যান্য সমস্যা দূরে সরিয়ে এবার সৌরশক্তির সাহায্য নিয়ে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ উদ্যোগ নিল দক্ষিণ দিনাজপুর প্রশাসন। তপন ব্লকে এনিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। খরার মরশুমে ওই ব্লকে জল সংকট মেটাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মাস কয়েক আগে বালুরঘাটে ব্লকের খরাপ্রবণ এলাকা কুয়ারনে সৌর প্যানেল বসানো হয়েছে। আর এই প্রকল্পের সাফল্য ইতিমধ্যে সামনে এসেছে। তাই একই পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিল তপন ব্লক প্রশাসন।
[বেতন বৃদ্ধির আশায় মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ পঞ্চায়েতের ডেটা এন্ট্রি অপারেটররা]
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকটি খরাপ্রবণ। সেখানকার ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে গোফানগর, হরসুরা, রামচন্দ্রপুরে সমস্যা বেশি। বর্ষাকালে এসব জায়গায় জলের সমস্যা না হলেও অন্যান্য মরসুমে পানীয় জলসংকট তীব্র হয়ে ওঠে। এই সময় মার্ক টু টিউবওয়েলগুলিও খারাপ হতে থাকে। গভীর নলকূপ থাকলেও, তা থেকে জল ওঠে কম। বিশেষত গ্রীষ্মে পুকুর ও জলাশয়গুলির অধিকাংশ শুকিয়ে যেতে থাকে। দু,একটি পুকুরে যেটুকু জল তলানিতে পড়ে থাকে, তা নোংরা হয়ে যাওয়ায় তা আর ব্যবহারের যোগ্য থাকে না। আগে এই জল পান করে অসুস্থ হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে বহুবার। প্রতি বছর বড় ট্যাঙ্কারে জল বয়ে নিয়ে দিতে দেখা যায় বিএসএফকে। তবে এবার খরা মরসুম সামনে আসতেই সতর্ক হয়েছে ব্লক প্রশাসন। আপাতত সবচেয়ে খরাপ্রবণ আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় সৌরশক্তির মাধ্যমে জল সরবরাহ প্রকল্পর কাজ শুরু হয়েছে তপনে।
তপন ব্লকের বিডিও সুশান্ত মাইতি বলেন, ‘এলাকায় সবচেয়ে বেশি জল কষ্ট ১১ নম্বর গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতে। সেখানকার মনিপুর, হাঁসাইপুর ও পার্শ্ববর্তী মোট পাঁচটি এলাকায় সোলার সিস্টেমের ডিপ টিউবওয়েল বসানো হবে। থাকছে পানীয় জলের ট্যাঙ্কিও। যাতে জল আসবে, মজুত হবে সৌরশক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়েই। শীত, গ্রীষ্ম ও বর্ষাতে একইভাবে বিশুদ্ধ পানীয় জল পাবেন এলাকার মানুষজন। এই কাজে টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। ভোটের আগেই কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।’ আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরের টাকা দিয়ে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় কাজ আগে করা হচ্ছে। বাকি এলাকায় ধাপে ধাপে এই কাজ হবে।
[শ্বশুরবাড়িতে নিগ্রহের শিকার, অপমানে আত্মঘাতী যুবক]
মাস কয়েক আগে বালুরঘাট ব্লকের চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েতের মোস্তাপুরের কুয়ারন এলাকায় সৌরশক্তিকে ব্যবহার করে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করা হয়েছে। তপন সংলগ্ন বালুরঘাট ব্লকের চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েতের মোস্তাফাপুর এলাকাও অনেকটা উঁচু। এদিকে শীতেও জলকষ্ট দেখা দেয়। মার্ক টু টিউবওয়েল পানীয় জলের মূল উৎস। কিন্তু পানীয় জল আনতে গ্রামবাসীদের অনেকটা দূরে যেতে হয়। তাই সেখানে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের জন্য এবার বসতি এলাকায় ব্যবহার করা হয়েছে সৌর বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের পরিবর্তে সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে উপরের ট্যাঙ্কিতে জল মজুত করা হচ্ছে। ট্যাপের মাধ্যমে সেই জল পাচ্ছেন এলাকার মানুষজন। একেকটির ব্যয় ৮৮ হাজার টাকা। রাজ্যে বিদ্যুৎ সংকট মেটাতে সৌরশক্তিকে আরও বেশি করে কাজে লাগানোর কথা বারবারই বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সেই কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন জায়গায় এখন সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.