বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: প্রকৃতি কখন কী খেলা দেখাবে তা কেউ বলতে পারে না। উত্তরের সমতল গরমে পুড়ছে। প্রখর দাবদাহে প্রাণ ওষ্ঠাগত সকলের। অন্যদিকে, পাহারি এলাকা তুষারাচ্ছন্ন। সমতলের মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুরে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু সিকিমের কিছু এলাকায় দেখা গিয়েছে উল্টো ছবি। সেখানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গিয়েছে। নির্বাচনের কারণে সংখ্যায় কম হলেও সমতলের হাঁসফাঁস গরম থেকে বাঁচতে কিছু পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন সিকিমে। যদিও বৃষ্টির জেরে ধস নামায় উত্তর কিছু রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে রেখেছে সিকিম প্রশাসন।
প্রবল গরমে কবে মিলবে বৃষ্টির দেখা? কিছুটা কি কমবে তাপমাত্রার পারদ? এখন এই প্রশ্নগুলোই ঘুরছে রাজ্যবাসীর মনে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, “উত্তরের পাহাড়-সমতলে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তাপমাত্রা কমছে না। উলটে বাড়বে। আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিও থাকবে। এদিকে সিকিমের উঁচু এলাকায় বৃষ্টি ও তুষারপাতের সম্ভাবনা বেড়েছে। ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় তুষারপাত চলছে।”
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার মালদহের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বালুরঘাটে তাপমাত্রার পারদ চড়েছিল ৩৮ ডিগ্রিতে। অন্যদিকে জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়িতে ছিল ৩৪ ডিগ্রি, কোচবিহারে ৩২ ডিগ্রি। জেলাগুলিতে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাতের ‘হলুদ’ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে হতে পারে শিলাবৃষ্টি। আগামী চারদিনে উত্তরের জেলাগুলোতে দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে খবর। মালদহ এবং দুই দিনাজপুরে তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি হতে পারে।
১৯ এপ্রিল আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট রয়েছে। ওই দিন সেখানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং ঘন্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এদিকে যখন উত্তরের সমতল অসহ্য গরমে পুড়ছে। ভোটপর্ব সামাল দিতে গিয়ে পুলিশ ও ভোটকর্মীরা অসুস্থ পড়ছেন। ঠিক তখন সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে মনোরম আবহাওয়া। সেখানে মঙ্গলবার রাত থেকে তুষারপাত শুরু হয়েছে। তুষারে মুখ ঢেকেছে নাথু-লা, ছাঙ্গু, বাবাধাম, জিরো পয়েন্ট, শেরথাংয়ের মতো উঁচু এলাকা। নাথু-লার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে মাইনাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। ছাঙ্গু এবং শেরথাং পৌঁছে গিয়েছে মাইনাস ১ ডিগ্রিতে। তুষারপাতের পাশাপাশি কিছু এলাকায় চলছে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি।
তুষারপাত ও বৃষ্টির জেরে চুংথাং, মঙ্গন, লাচুং এলাকার কিছু রাস্তায় ধস নেমেছে। টুং নাগা হয়ে চুথাং-মঙ্গন রোডে যানচলাচল বন্ধ আছে। সঙ্কলন হয়ে ঘুরপথে যানবাহন চলছে। তবে চুংথাং-লাচুং রোড অনেকটা পরিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। চুংথাং-লাচেন রোডে সকাল ৭টা থেকে ৮টা এবং বিকেল ৪টে থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত হালকা যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে লোকসভা নির্বাচনের জন্য এবার এপ্রিলে সিকিমে পর্যটকের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে সিকিম প্রশাসনের খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.