দেবব্রত মণ্ডল: শীতকালে শীত ঘুমে যায়। তাই সেপ্টেম্বর, অক্টোবর মাসে পেট ভরে খেয়ে প্রোটিন সংগ্রহ করে শরীরে। সারা শীতকাল ধরে সেই প্রোটিন শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গ সচেতন রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু এবার সেই শীত ঘুম থেকে উধাও। শীতকালেও মাঠেঘাটে বিষধর সাপেদের দাপাদাপি চিন্তা বাড়িয়েছে চাষিদের। হাড় কাঁপানো শীতেও ঘটছে বিষধর সাপের কামড়ের মতো ঘটনা। কপালে ভাঁজ চিকিৎসকদের।
[স্বপ্নপূরণের ট্রেনে কার্যত স্বপ্নভঙ্গ, কাটোয়া-বলগোনা রুটে প্রশ্নের মুখে পরিষেবা]
আগে শোনা যেত, শীতকালে শীত তেমন পড়ছে না। তাই উপদ্রব ঘটছে সাপের। কিন্তু এবছর প্রবল ঠান্ডায়ও সাপের উপদ্রব কমছে না। গ্রামবাংলায় দিনের তাপমাত্রা ১৫-১৬ ডিগ্রি থাকলেও রাতে তা নেমে যাচ্ছে ৯-১০ ডিগ্রিতে। তাও দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে বিষধর সরীসৃপরা! জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাপের কামড়ে বিপদে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। হাসপাতালে অ্যান্টি ভেনম দিয়ে চিকিৎসা চলছে। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, নভেম্বর থেকে জানুযারি পর্যন্ত বেশ কিছু বিষধরের কামড়ের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ সাপের কামড় ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলাতে। মাঠে চাষ করতে গিয়ে দিনের বেলায়ই কেউটের কামড় খেয়েছেন মোক্তার মোল্লা এক ব্যক্তি। এখন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের স্নেক বাইট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চিকিৎসক ড: সমর রায় জানিয়েছে্ন, শীতেও সাপের কামড় কমছে না। বরং দিন দিন বাড়ছে। কালাচ নয় এখন বেশি দেখা যাচ্ছে কেউটের কামড়। তাঁর মতে, বিশ্ব উষ্ণায়ণের কারণে সম্ভবত সাপেদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন ঘটেছে। উধাও হয়েছে শীতঘুম। বদলে যাচ্ছে সাপদের বাসস্থানও।
[পৌষপার্বণে সুখবর, খড়গপুর আইআইটির সৌজন্যে ঢেঁকিছাঁটা চাল ফিরছে বাংলায়]
সর্ব বিশারদরা জানিয়েছেন, শীতকালে সাপ সাধারণত শীতঘুমে যায়। সর্বনিম্ন ১১ এবং সর্বোচ্চ ২৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে সাপ। ১১ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নেমে গেলে সাপের শারীরিক ক্রিয়াকলাপ বন্ধ হয়ে যায়। এমনকী, ২৮ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রায় সাপের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত শীতকালে প্রায় কিছুই খায় না বিষধর এই সরীসৃপরা। কার্যক্ষমতাও হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু, এখন দেখা যাচ্ছে, শুধু সক্রিয় থাকাই নয়, শীতকালে ছোবলও মারছে সাপ। দাপট বেশি কেউটেরই। তবে কালাচ ও চন্দ্রবোড়ার কামড়ের ঘটনাও যে ঘটছে না, এমন নয়। চন্দ্রবোড়া সাপ মরশুমে শীতঘুমে থাকলেও দিনের বেলায় রোদ পোহাতে বের হয় আর তখনই কামড় দেয়। কিন্তু মাঠেই কামড়াচ্ছে কেউটে। সাপেদের এই চরিত্র পরির্বতন প্রভাব ফেলবে পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের উপর এমনই মত বিশেষজ্ঞদের।
[সংক্রান্তি স্পেশ্যাল ‘সুগার ফ্রি’ তিলকূট, হাতে গরম বানাচ্ছেন বিহারের কারিগররা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.