অরূপ বসাক, মালবাজার: দিনকয়েক ধরেই উত্তরবঙ্গ ভিজছে কখনও হালকা আবার কখনও মাঝারি বৃষ্টিতে৷ বৃষ্টিভেজা শনিবার ভোরে তখনও পুরোপুরি ঘুম ভাঙেনি মালবাজারের চেল কলোনির বাসিন্দাদের৷ বৃষ্টির সকালে আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠেছেন কয়েকজন৷ ঘুম ভেঙে গিয়েছিল চেল কলোনির বাসিন্দা সূর্য সরকারের স্ত্রী মমতার৷ প্রতিদিনের মতো একা হাতেই শুরু করেছিলেন ঘরের কাজ৷ সব কাজের মাঝে কুয়োতে পানীয় জল তুলতে যান মমতা৷ কিন্তু কুয়োতে মুখ বাড়াতেই চক্ষু চড়কগাছ তাঁর৷ তিনি দেখেন, কুয়োতে দিব্যি ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে বিপদ৷ ভয়ে সিঁটিয়ে যান ওই গৃহবধূ৷ জুড়ে দেন চিৎকার৷ ঘরে ঢুকে পড়েন তিনি৷
মমতার চিৎকারে আচমকাই ঘুম ভেঙে যায় চেল কলোনির৷ বাড়ি থেকে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ জড়ো হয়ে যান প্রতিবেশীরাও৷ ততক্ষণে যদিও কথা বলার ক্ষমতাও হারিয়েছেন ওই মহিলা৷ তাঁর হাতের ইশারায় পরিজন ও প্রতিবেশীরা কুয়োর দিকে তাকিয়ে দেখেন৷ কিন্তু প্রতিক্রিয়া আসে একইরকম৷ তাঁরা দেখেন, কুয়োর জলের ভেতর উঁকি দিচ্ছে একটি বিরাট বিষধর গোখরো সাপ৷ কুয়ো থেকে বাইরে আসারও আপ্রাণ চেষ্টা করছে ওই সাপটি৷ গৃহবধূ মমতা সরকারের বলেন, ‘‘রাত্রিবেলায় যদি কুয়ো থেকে জল তুলতে যেতাম, তা হলে বড় বিপদ ঘটে যেত।’’
গৃহবধূর প্রতিবেশীরাই এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য আসিক আলি এবং শুভঙ্কর বসাক নামে দুজনকে ডেকে আনেন। বহু চেষ্টা করে তাঁরা সাপটিকে কুয়ো থেকে বের করেন। সাপটিকে বস্তাবন্দি করেন। সাপটিকে অবশেষে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে৷ জঙ্গলে শারীরিক পরীক্ষার পর আবারও জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে গোখরো সাপটিকে৷ বনকর্মীদের দাবি, উত্তরবঙ্গের বেশীরভাগ জায়গা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে৷ তাই খাবার ও থাকার জায়গা পাচ্ছে না হাতি, সাপ বেড়িয়ে আসছে লোকালয়ে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.