ধীমান রায়, কাটোয়া: মাঠে চাষের কাজে গিয়ে সাপে কাটে বছর সাতাশের যুবককে। পরিবারের লোকজন তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করেও দেয়। চিকিৎসাও চলছিল। আর চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যান সাপে কাটা রোগী। শনিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার ব্লক হাসপাতালের ঘটনা। আর এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় হুলুস্থুল পড়ে যায়। চারিদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়।
হাসপাতাল থেকে রোগীর মোবাইলে ফোনও করা হয় বার কয়েক। বেশকয়েকবার ফোন করার পর ‘রোগী’ নিজেই ফোনটা ধরে বলেন, “চিন্তা করবেন না। আমি ঠিক আছি। এখন ওঝার কাছে আমার চিকিৎসা চলছে। বিষ নামানো হচ্ছে।” আর সাপে কাটা ‘রোগী’র কাছ থেকে এই জবাব পাওয়ার পর অগত্যা তাঁর হাসপাতালের বেডে ফেরার আশা ছেড়ে দেওয়া হয়। শনিবার বিকেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভাতার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছে বলে জানা গিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে ভাতারের রাজিপুর গ্রামের বাসিন্দা ২৭ বছরের এক যুবককে ভাতার ব্লক হাসপাতালে ভরতি করেন তাঁর পরিবারের লোকজন। মাঠে তাঁকে সাপে কেটেছিল। বাড়িতে জানালে তাঁকে হাসপাতালে এনে চিকিৎসা শুরু হয়। তারপর দুপুর ১২টা নাগাদ ওই রোগী চুপিচুপি পালিয়ে যান হাসপাতাল থেকে। বেশকিছুক্ষণ পর বিষয়টি নজরে আসে।
রোগী ভরতির সময় রেজিস্টারে রোগী বা পরিবারের কারও মোবাইল নম্বর লিখে রাখা হয়। ওই নম্বরে হাসপাতাল থেকে বারবার ফোন করা হলে জানা যায় রোগী হাসপাতাল ছেড়ে ওঝার কাছে পালিয়ে গিয়েছেন। এরপরেই পুলিশকে জানানো হয় গোটা বিষয়টি। ভাতার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সংঘমিত্রা ভৌমিক বলেন,”অজানা কিছুর কামড় খেয়ে একজন রোগী ভরতি হয়েছিলেন। তারপর সে পালিয়ে যায়। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।”
সাপ নিয়ে গবেষণা করেন ভাতারের বাসিন্দা ধীমান ভট্টাচার্য। তিনি বলেন,”বর্তমান যুগে যেখানে চিকিৎসা বিজ্ঞান এত উন্নত হয়েছে সেখানে এখনও ওঝার ঝাঁড়ফুক বিশ্বাস করা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা এনিয়ে ওই সমস্ত ওঝাদের তালিকা তৈরি করে প্রশাসনের কাছে জানাব। মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রচারও করব।” স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ভাতার হাসপাতাল থেকে দুই কিলোমিটার দুরে বানেশ্বরপুর গ্রামের ওঝার বাড়িতে নিজেই চলে যান ওই সাপে কাটা রোগী। পুলিশ রোগীর খোঁজ শুরু করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.