Advertisement
Advertisement

Breaking News

হাতির দাঁতের মূর্তি পাচারকারী বাবা-মেয়ের মূল এজেন্ট ধৃত

ফের উদ্ধার ৪২ লক্ষ টাকার সামগ্রী।

smuggler of Idols made of ivory arrested
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:March 13, 2019 8:53 pm
  • Updated:March 13, 2019 8:53 pm  

অর্ণব আইচ ও সাবিরূজ্জামান: হাতির দাঁত পাচারে রাজ্যের একাধিক জায়গায় এজেন্ট রেখেছিল বাবা-মেয়ে। বুধবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে তল্লাশি চালিয়ে এক প্রধান এজেন্টকে গ্রেপ্তার করলেন ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)-এর গোয়েন্দারা। গৌতম ভাস্কর ওরফে রতন নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ব্যক্তির বাড়ি থেকে ৪২ লক্ষ টাকার হাতির দাঁতের বিভিন্ন ধরনের জিনিস উদ্ধার হয়েছে।

কেরল থেকে কলকাতা হয়ে নেপালে হাতির দাঁতের জিনিস পাচারের ছক। মঙ্গলবার ডিআরআইয়ের গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেপ্তার হয় কেরলের বাসিন্দা সুধীশ চন্দ্রবাবু ও তার মেয়ে অমিতা। তাদের জেরা করে জানা যায়, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে এই হাতির দাঁত পাচার চক্রের এজেন্ট। সেই সূত্র ধরেই বহরমপুরের জিয়াগঞ্জের গৌতমের ঠিকানা পান গোয়েন্দারা। সেইমতো জিয়াগঞ্জে গোয়েন্দারা প্রথমে গৌতমের বাড়িতে ক্রেতা সেজে হানা দেন। গৌতম ‘ক্রেতা’দের কাছে স্বীকার করে, তার কাছে বেশ কয়েকটি হাতির দাঁতের তৈরি মূর্তি আছে। সেইমতো ঘরের ভিতর তল্লাশি চালিয়ে গোয়েন্দারা ৪২ লক্ষ টাকার মূর্তি উদ্ধার করেন। জেরার মুখে গৌতম জানায়, তার সঙ্গে মূল যোগাযোগ রয়েছে অমিতা সুধীশের। অমিতার কসবার রাজডাঙার বাড়িতে সে বহুবার গিয়েছে। সেখানে গিয়ে নগদ টাকা দিয়ে হাতির দাঁতের মূর্তি নিয়ে আসত সে। গৌতমও এই জিনিসগুলি পাচার করত নেপালে। জানা গিয়েছে, ধৃত ভাস্করের বাবা ও পূর্বপুরুষ হাতির দাঁতের বিশিষ্ট শিল্পী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। হাজারদুয়ারি মিউজিয়ামের পাশে তাদের একটি পারিবারিক দোকান আছে। সেখানে এখন ধাতব, সেরামিক ও কাঠের শিল্প সামগ্রী বিক্রি হয়। এর আড়ালে হাতির দাঁতের সামগ্রী বিক্রি হত কি না, তা নিয়েও তদন্ত চলছে।

Advertisement

[এখনই দল ছাড়ছেন না, জল্পনা ওড়ালেন অভিমানী শোভন]

সুধীশ ও অমিতার অন্য এজেন্টরাও এই জিনিসগুলি মূলত নেপালে পাচার করত। যে হাতির দাঁতের টুকরো উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি কতদিনের পুরনো, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। ২০১৫ সাল বা তার আগে যে হাতিগুলি কেরল ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জঙ্গলে মেরে দাঁত কেটে নেওয়া হয়েছিল, এগুলি সেই হাতির দাঁত, না কি ফের নতুন করে হাতি শিকার শুরু হয়েছে, গোয়েন্দারা তা জানতে তদন্ত শুরু করেছেন। একসময় ওড়িশায় প্রচুর হাতি মারা হয়েছে। যেহেতু ওড়িশার কিছু জঙ্গল এই রাজ্যের জঙ্গলের কাছেই, তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মূল্যবান জিনিস ও মূর্তিগুলির কদর রয়েছে নেপালের শৌখিন দোকানে। কাঠমান্ডু ও নেপালের পর্যটনের জায়গাগুলিতে রয়েছে এই শৌখিন দোকানগুলি। ইউরোপ-সহ বিভিন্ন জায়গা, এমনকী, জাপান, চিন, থাইল্যান্ডেও পাচার হয় এই মূর্তিগুলি। এখন নেপাল থেকেও কখনও অমিতার কাছে সরাসরি আবার কখনও এজেন্টেদর অনলাইনে এই জিনিসের অর্ডার দেওয়া হত। অনলাইনে অর্ডার পাওয়ার পর এজেন্টরা নিজেরাই নেপালে গিয়ে পাচার করে আসত এই মূর্তিগুলি।

গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে যখন কেরলের থুনডাথিল রেঞ্জের এডামালায়ার ফরেস্ট স্টেশনের আধিকারিকরা অন্তত কুড়িটি হাতি মেরে সেগুলির দাঁত পাচার হওয়ার খবর পান, তখনই তাঁরা জানতে পারেন যে, কলকাতার ‘থানকাচি’ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। কেরলের বাসিন্দাদের কাছে ‘থানকাচি’ বলে পরিচিত মহিলা আসলে সুধীশের স্ত্রী বা অমিতার মা বলে জানতে পারেন কেরলের বন দপ্তরের আধিকারিকরা। সেই ‘থানকাচি’ পালিয়ে গেলেও ফাঁদ পেতে ধরা হয় স্বামী সুধীশকে। তখনই জানা যায়, স্ত্রীকে সামনে রেখে আসলে হাতির দাঁত পাচারের কারবার চালায় সুধীশ। সে নিজেই আন্তর্জাতিক স্তরের এক এজেন্ট। জামিন পেয়ে পালানোর পর তার সন্ধান চালানো হয়। তারই জেরে বছর দু’য়েক আগে কসবার রাজডাঙার ফ্ল্যাটে হানা দেন গোয়েন্দারা। কিন্তু তখন কারও সন্ধান মেলেনি। বছর দু’য়েক ধরে তল্লাশি চালিয়ে এবার তাদের সন্ধান মিলল। এবার ‘থানকাচি’ ও অন্য এজেন্টদের সন্ধানেও তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।

[কলকাতায় ভেজাল দুধ তৈরির অভিযোগে ধৃত ২]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement