নন্দন দত্ত ও সুনীপা চক্রবর্তী: আলো কমে যাওয়ার কারণে কপ্টার নামায় অসুবিধা ছিল৷ তাই সিউড়ির জনসভায় পৌঁছাতেই পারলেন বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি-সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা। বাতিল হয়ে গেল তাঁদের সিউড়ির জনসভা৷ যা নিয়ে প্রকাশ্যেই প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিজেপির নেতা ও কর্মী-সমর্থকরা৷ দোষারোপ করলেন পুলিশ প্রশাসনকে।
[বাগনানে স্কুলের মাঠে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণ, আহত ২ ]
কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা অভিযোগ করলেন, পুলিশ চক্রান্ত করেছে। এমন ভাবে দেরি করিয়েছে যাতে সূর্যের আলো থাকতে থাকতে কপ্টার পৌঁছাতে না পারে। তিনি আশ্বাস দেন বীরভূমেই ফের জনসভা করবে সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। যদিও এই বিষয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল৷ তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংগঠন দেখে অমিত শাহ আগেই ভেগেছে, স্মৃতি ইরানিও আসতে সাহস দেখালেন না। গত ২১ জানুয়ারি সিউড়িতে অমিত শাহের জনসভা করার কথা ছিল। কোনও মাঠে সভা করার অনুমতি না পেয়ে জাতীয় সড়কের পাশে প্রতিমা পল্লির ধান জমিতে সভা করার পরিকল্পনা নেন বিজেপি নেতৃত্ব৷ কিন্তু অমিত শাহ আসবেন না জানতে পেরেই মনোবল ভেঙ্গে গিয়েছিল কর্মীদের। কারন গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা করতে ডিসেম্বরেই তারাপীঠে আসার কথা ছিল অমিত শাহের। প্রস্তাবিত রথযাত্রার অনুমতি দেয়নি আদালত। সে যাত্রায় রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে রামপুরহাটে এনে মুখ রক্ষা করেছিল বিজেপি। বুধবার স্মৃতি ইরানির সভা ঘিরেও ছিল সাজো সাজো রব। কিন্তু এবারও হতাশ হতে হল গেরুয়া শিবিরকে৷ পাশাপাশি দলের কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতা বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরি৷ জানান, লাভপুরে তিনটে বাসের কাঁচ ভাঙ্গা হয়েছে৷ কর্মীদের গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করিয়ে কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করা হয়েছে। পথ নিরাপত্তার নামে তল্লাশি চালান হয়েছে।
[চলে গেলেন পতাকা গবেষক কালী স্যর, শোকস্তব্ধ আসানসোল]
সিউড়িতে সভা করতে না পারলেও এদিন ঝাড়গ্রামে সভা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি৷ ব্রিগেড মহাজোটের জনসভার কড়া সমালোচনা করেন তিনি৷ হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, মোদির নেতৃত্বে ২০১৯-এ পশ্চিমবঙ্গে বিকাশের লহর বইবে৷ তাই ভয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ঝাড়গ্রাম ব্লকের গড় শালবনিতে রাবণপোড়া ময়দানের জনসভায় স্মৃতি বলেন, “প্রশাসনকে জানাতে চাই মানুষ গণতন্ত্র, সংবিধানকে সম্মান করে তাদের কোনও মাইকা লাল রুখ নেহি পায়েঙ্গে।’’ সর্বভারতীয় সভাপতির সুরেই ঝাড়গ্রামের সভা থেকে সরকারি কর্মীদের ডিএ নিয়ে রাজ্যকে খোঁচা দেন স্মৃতি৷ জানান, ক্ষমতায় এলে এরাজ্যে সপ্তম পে কমিশন চালু হবে৷ শাসকদের বিরুদ্ধে তোলবাজিরও অভিযোগ করেন বিজেপি নেত্রী৷
[নেতাজির চিঠি ও চেয়ার আজও সযত্নে রক্ষিত আসানসোলের রায় পরিবারে]
বুধবার বিজেপির উদ্যোগে গণতন্ত্র বাঁচাও সভা ঘিরে ব্যাপক মানুষের জনসমাগম হয়েছিল ঝাড়গ্রামে। ওই জেলা ছাড়াও বাঁকুড়া, পুরলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব মেদিনীপুর থেকেও প্রচুর মানুষ এসেছিলেন। এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তন জঙ্গলমহল থেকে শুরু হবে। মানুষের অবস্থা এখানে অত্যন্ত খারাপ। উন্নতি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে এখানে প্রবঞ্চনা করা হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ জবাব দিয়েছে। মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করেছে। রাজনৈতিক হিংসা আমদানি করা হচ্ছে। হিংসা কবলিত করা হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদি আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন। সারা ভারত, পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকিয়ে আছে। তৃণমূলের জমানত জব্দ হবে জঙ্গলমহলে।’’ রাজ্য বিজেপি সভাপতি আরও বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করতে দেওয়া হচ্ছে না। পঞ্চায়েত সমিতিকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এসবের যোগ্য জবাব দেব। এখানে চাকরি নেই, ব্যবসা নেই, শিক্ষার পরিবেশ নেই। এসএসসি হয় কিন্তু নিয়োগ হয় না। যেখানে পোস্ট নেই সেখানে শিক্ষক পাঠানো হয়। প্রাইমারি স্কুলে সিভিক টিচার রাখা হচ্ছে।” রাজ্য মহিলা সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ডিমভাতের লোভ দেখিয়ে ব্রিগেড ভরানো হয়েছে। অ্যান্টি সিবিআই জোট হয়েছে। যে ভাবে বিজেপির সভায় ভিড় হচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে মানুষ বিজেপির পাশে আছে। জঙ্গলমহল ডাকছে, বিজেপি আসছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.