দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: অনলাইন ক্লাসের জন্য সম্বল একটি মাত্র স্মার্টফোন। কিন্তু সেটি চুরি হয়ে যাওয়ায় কীভাবে অনলাইন ক্লাস হবে, তা নিয়ে চিন্তা পড়ে যায় নবম শ্রেণীর ছাত্রী মৌ সাহা। আর মানসিক অবসাদের জেরেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করল সে। সোনারপুর (Sonarpur) থানার বিদ্যাধরপুর এলাকার এই ঘটনায় হতবাক পাড়া-প্রতিবেশীরা।
ওই ছাত্রীর বাবার একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাবা-মা ওই দোকান দেখাশোনা করতেন। দুপুরে তাঁরা বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করতে গেলে, ওই সময় মেয়ে দোকানে বসত। বিকেলে আবার তার বাবা-মা দোকানে ফিরলে সে বাড়ি চলে যেত। এটাই ছিল প্রতিদিনের রুটিন। শুক্রবার দুপুরে দোকানেই বসে ছিল মৌ। সাইকেল নিয়ে এক ক্রেতা এসে বেশ কিছু সামগ্রী নেবেন বলে ফর্দ ধরিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর তিনি বলেন, টাকা আনতে ভুলে গিয়েছি। যদি ফোনটা একটু দেন, তাহলে বাড়ি থেকে কাউকে টাকা নিয়ে আসতে বলতে পারি। ক্রেতার আরজি মেনে তাঁকে ফোনটা দিয়ে দেয় ওই ছাত্রী। এদিকে, জিনিসপত্র প্যাকেটে ভরতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সে। সেই সুযোগে ওই ক্রেতা মোবাইল ফোনটি নিয়ে সাইকেল চালিয়ে চম্পট দেয়। বিকেলে বাবা-মা দোকানে ফিরে আসলে গোটা বিষয়টা জানায় মৌ।
তাঁর বাবা স্বপন সাহা বলেন, “মোবাইল চুরি যাওয়াতে আমরা মেয়েকে বকাবকি করিনি। কিন্তু স্কুলের অনলাইন ক্লাসের খুব অসুবিধা হবে বলে কান্নাকাটি করছিল। তারপর বাড়ি চলে যায়। রাতে বাড়ি ফিরে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। ডাকাডাকি করে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর দরজা ভেঙে মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখকে পাই।” দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ওই ক্রেতার খোঁজ করা হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.