সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: কেউ বলছেন ‘গলতি সে মিসটেক’৷ কেউ আবার অপেক্ষা করতে চান আর ক’টা দিন৷ বর্ধমানের আরেক প্রার্থী তো এক্সিট পোলকে ‘অলীক কল্পনা’ বলেই দাবি করলেন। রাজ্যে বিজেপির উত্থান সন্দেহাতীত হলেও, বাংলা থেকে নির্বাচিত হওয়া দুই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর জয়ী হওয়া নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিচ্ছে৷
তাই বুথফেরত সমীক্ষা বা এক্সিট পোলের পরও স্বস্তিতে নেই কেউই। দুই বর্ধমানের তিন আসনেই শাসক কিংবা বিরোধী যারা এগিয়ে, তারাই একমাত্র এক্সিট পোলকে গুরুত্ব দিচ্ছে৷ বাকিরা কেউ এই বুথফেরৎ সমীক্ষা মানতে নারাজ। তিন আসনের মধ্যে বুথফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী শাসকদলের অনুকূলে ২–১ ফলাফল হলেও দলের নিচু তলার কর্মীরা সন্দিহান, শেষ পর্যন্ত এই ফলাফল বাস্তবায়িত হবে কি না৷ উল্লেখযোগ্যভাবে, এই এক্সিট পোল মানতে চাননি বিজেপিরই দুই প্রার্থী। বুথফেরৎ সমীক্ষা অনুযায়ী, আসানসোল কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন। ‘কাঁটে কা টক্কর’ হয়েছে এই কেন্দ্রে। পঞ্চাশ-পঞ্চাশ সুযোগ মুনমুন ও বাবুল সুপ্রিয়৷ যে কেউ জয়ী হতে পারেন আসানসোল কেন্দ্রে। ভোটের দিনও দাপিয়ে ‘ভোট’ করিয়েছেন বাবুল৷ আবার নিজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রে দাপটের সঙ্গে ভোট করিয়েছেন জিতেন্দ্র তেওয়ারিও৷ তবে এক্সিট পোল এগিয়ে রেখেছে মুনমুনকেই।
তবে কি ‘ভোট’ করাতে বিজেপির থেকেও বেশি সফল হয়েছে তৃণমূল? এক্সিট পোল অনুযায়ী, রাজ্যে বিজেপির ভাল ফল হলেও আসানসোলের আসনটি কি তবে হাতছাড়া হতে চলেছে বিজেপির? বুথফেরৎ সমীক্ষা দেখে হতাশ হয়ে পড়া বিজেপি কর্মীদের মনোবল বাড়াতে সোশ্যাল মিডিয়াকেই আশ্রয় করেছেন বাবুল। রবিবার বুথফেরত সমীক্ষা প্রকাশ হতে রাতেই বাবুল পোস্ট করেন,‘‘এক্সিট পোল দেখে ঘাবড়াবেন না। সব এক্সিট পোলের মার্জিন অফ এরর থাকে। আসানসোলে আমি হারছি বলে যা দেখিয়েছে, ওটা মার্জিন অফ এরর। ‘গলতি সে মিসটেক’ করে ফেলেছে। আমিই জিতব৷’’ তাঁর এই পোস্টে শাসকদলের কটাক্ষ, বুথফেরৎ সমীক্ষার ফল তাঁর প্রতিকূলে যাওয়ায় নিজের হতাশাকেও চেপে রাখতে পারেননি বাবুল৷
বর্ধমান–দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে বুথফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, জয়ী হতে পারেন তৃণমূলের মমতাজ সংঘমিতা। এই কেন্দ্রেও বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে লড়াই হলেও সিপিএম প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরিও ফ্যাক্টর ছিলেন। সিপিএম এবং তৃণমূলের নিজস্ব ভোট অনেকটাই কেটে বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে বলেও দলীয় অর্ন্ততদন্তে জানা গেছে। সেখানে তৃণমূলের জয় নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছেন। বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া এই এক্সিট পোলেরই বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘এক্সিট পোল কেউ করে থাকতেই পারে। যারা ভোট দেয়নি তারাই এক্সিট পোল করেছে। ভোট যারা দিয়েছে, তারা তাদের রায় জানাবে তেইশ তারিখ।’ সবাইকে চমকে দিয়ে বর্ধমান-পূর্ব কেন্দ্রের বুথফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, জয়ী হতে পারেন বিজেপির পরেশচন্দ্র দাস। ‘অভাবনীয়’ এই ফলাফল নিয়ে তৃণমূল কটাক্ষ করেছে এক্সিট পোলকে। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী সুনীল মণ্ডলের বক্তব্য,‘অলৌকিক কল্পনা। ওরা স্বপ্ন দেখুক। তিন নম্বরে থাকবে বিজেপি। এক্সিট পোলকে মিথ্যা প্রমাণ করবেন ভোটাররাই।’ তবে সব বিতর্কের অবসান ২৩ মে-র দিকেই তাকিয়ে তামাম রাজনৈতিক দল ও রাজ্যবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.