টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: মরদেহ চোরাচালান। পু্লিশের নাকের ডগা দিয়ে বাসের ছাদে কিংবা ভাড়ার গাড়িতে কঙ্কাল বাক্স করে পৌঁছে যাচ্ছে ভিন রাজ্যের বিভিন্ন শহরে। সূত্রের খবর, এই মানব কঙ্কালের ক্রেতা না কি বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা!
পুলিশ গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই অবৈধ কারবারের সাথে যুক্ত বাঁকুড়ার জেলার কৌম শ্রেণির মানুষজন। রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সাথেও কোনও না কোনও সূত্রে এই সমস্ত এই চোরাচালান চক্রের লোকজন যুক্ত থাকে। যারা রাতের অন্ধকারে গণকবর থেকে বিভিন্ন বেওয়ারিশ মৃতদেহের কঙ্কাল চুরি করছে। পরে রাসায়নিক মিশিয়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যালের শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করে। যার বিনিময়ে পকেটে ঢোকে মোটা টাকা। সূত্রের খবর, শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও পাচার করা হয় কঙ্কাল। কঙ্কাল চোরাচালান চক্রের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, গভীর রাতে বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে কঙ্কাল চুরি করা হয়। পরে প্রক্রিয়াকরণ করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জেলা শহরে এবং কলকাতা শহরে পাঠানো হয়। কবর-শ্মশানের লাগোয়া এলাকায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজের কিছু অসাধু কর্মচারীরা কঙ্কাল সংগ্রহ করে। এক্ষেত্রে মেডিক্যালের মর্গে আসা বেওয়ারিশ মরদেহ কাজে লাগানো হয়। বেওয়ারিশ মরদেহের যদি ওয়ারিশ খুঁজে পাওয়া না যায়, তবে একজন নকল ওয়ারিশ তৈরি করা হয়। ওই ওয়ারিশ দিয়েই লিখিতভাবে মরদেহ দান করানো হয়।
অবৈধভাবে কঙ্কাল কেনা-বেচার অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পার্থ প্রতিম প্রধান। তিনি বলেন, “অ্যানাটমি বিভাগে ফরমালিন দেওয়ার পর দেহ থেকে আর কঙ্কাল পাওয়া যায় না। কলেজে পঠনপাঠনের জন্য যে কঙ্কাল থাকে সেগুলো পুরানো।” আর ডাক্তার পড়ুয়াদের বক্তব্য, তাঁরাও এ ধরণের কঙ্কাল কেনেন না। হয় সিনিয়রদের কাছ থেকে ব্যবহার করা পুরাতন কঙ্কাল কেনা হয় করা হয় আর তা না হলে সিনিয়রই নতুন কঙ্কাল কিনে দেয়। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “বিষয়টি খুবই গুরুতর। মানব কঙ্কাল এবং অঙ্গ চোরাচালানের সাথে বহুমানুষ যুক্ত। তবে এ জেলায় এখনও তেমন কোনও ঘটনা সামনে আসেনি। তবে বিষয়টিতে নজর রয়েছে আমাদের।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.