ফাইল ছবি।
পলাশ পাত্র, তেহট্ট: একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হল সাতচল্লিশটি হাড়গোড়৷ এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল পলাশিপাড়ার সাহেবনগর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায়৷ বন্ধ থাকা ওই পরিত্যক্ত ঘর থেকে হাড়গোড়গুলি সংগ্রহ করেছে পুলিশ৷ ফরেনসিক টেস্টে পাঠানো হয়েছে সেগুলি৷
পরিত্যক্ত ওই বাড়িটির মালিক প্রিয়ব্রত মণ্ডল৷ প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর বছর তিনেক আগে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন তিনি৷ দুটি ছেলেও রয়েছে তাঁর৷ প্রিয়ব্রতর বড় ছেলে শুভঙ্কর পুণেতে থাকতেন৷ ছোট ছেলে দীপঙ্কর সাহেবনগরে চায়ের দোকান সামলাতেন৷ দীপঙ্কর বাবার সঙ্গে এই বাড়িতে থাকতেন না৷ মামার বাড়িতেই থাকেন তিনি৷ ছেলেদের কাছে না পেয়ে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রিয়ব্রত৷ এছাড়াও একটি দুর্ঘটনার জেরে হাঁটাচলাও করতে পারতেন না তিনি৷ এই পরিস্থিতিতে ছোট ছেলে দীপঙ্করই মামার বাড়ি থেকে প্রতিদিন খাবার দিয়ে যেতেন তাঁর বাবাকে৷ তবে ছোট ছেলেকে মোটেও পছন্দ করতেন না৷ খাবার দিতে গেলেই ছেলেকে মারধর করতে তেড়ে যেতেন প্রিয়ব্রত৷ তাই ইদানীং খাবার দিয়ে যাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছিলেন দীপঙ্কর৷
এদিকে, রবিবার পুণে থেকে বাড়ি ফেরেন প্রিয়ব্রতর বড় ছেলে শুভঙ্কর৷ বাড়ির দরজায় ধাক্কাধাক্কি করেও বাবার সাড়া পাননি তিনি৷ সন্দেহ হয় শুভঙ্করের৷ পাড়া প্রতিবেশীরাও জড়ো হয়ে যান৷ খবর দেওয়া হয় পলাশিপাড়া থানায়৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে ঘরের ভিতরে ঢোকে৷ ঘরে ঢুকেই দুর্গন্ধ পান তাঁরা৷ ঘরের মেঝের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যান তাঁরা৷ দেখেন ওই ঘরের মধ্যে পড়ে রয়েছে হাড়গোড়৷ মোট সাতচল্লিশটি হাড় উদ্ধার করে পুলিশ৷ হাড়গুলি ফরেনসিক টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে৷ শুভঙ্করের দাবি, একা থাকাকালীন ঠিকমতো খাবার খেতেন না তাঁর বাবা৷ তাই অপুষ্টিতে ভুগছিলেন৷ ওই হাড়গোড়গুলি তাঁর বাবার বলেও দাবি শুভঙ্করের৷ তিনি জানান, অপুষ্টিতে ভুগতে ভুগতেই নাকি মারা গিয়েছেন তাঁর বাবা৷ স্থানীয়দের দাবি, বেশ কয়েকদিন ধরেই প্রিয়ব্রত কিংবা তাঁর ছোট ছেলেকে দেখা যাচ্ছিল না৷ অনেকদিন আগেই প্রিয়ব্রত মারা গিয়েছিলেন বলেই জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা৷
ছেলেরা বাবাকে খুন করেছে নাকি স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যু হয়েছে প্রিয়ব্রতর, তা নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরা৷ উদ্ধার হওয়া ওই হাড়গোড়গুলির ফরেনসিক টেস্টের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্যই দিতে পারছেন না পুলিশ আধিকারিকরা৷ আপাতত শুভঙ্কর এবং দীপঙ্করের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.