Advertisement
Advertisement

সিঙ্গুরের ইতিহাস লিপিবদ্ধ হবে বইয়ের পাতায়

ঐতিহাসিক মঞ্চ থেকে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর৷

Singur story will be written in the book
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 15, 2016 9:06 am
  • Updated:June 22, 2022 4:06 pm  

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ও নব্যেন্দু হাজরা, সিঙ্গুর: তিনি বই লিখতে শুরু করলেন৷ ১০ বছর আন্দোলনের ইতিহাস৷ বুধবার সিঙ্গুরের ঐতিহাসিক মঞ্চ থেকে যখন এই ঘোষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করছেন, তখন কোথায় যেন তাঁর গলাটা ধরে আসছে৷ হয়তো মনে পড়ছিল একটার পর একটা দিনের কথা৷ সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনে বলেছিলেন, এবার আমি শান্তিতে মরতেও পারি৷ আসলে এই আন্দোলন করতে গিয়ে তাঁর যে মৃত্যুও হতে পারত, সে কথা এদিন আবার বলে দিলেন৷ ইতিহাসকে স্মরণ রাখতে এখন থেকে প্রতি ১৪ সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকার সিঙ্গুর দিবস পালন করবে৷ নন্দীগ্রামের মতো সিঙ্গুরেও তৈরি হবে স্মারক৷ এটাই হবে কৃষিজমি আন্দোলনের প্রতীক৷

কত মানুষ বুধবার এসেছিলেন সিঙ্গুরে? সত্যিই হিসাব করা শক্ত৷ দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের দু’পাশে যতদূর চোখ যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ৷ ধোঁয়ার মতো আকাশে উড়ছে আবির৷ শানাপাড়া, বেড়াবেড়ি, জয়মোল্লায় তো সকাল থেকে ছিল উৎসব৷ মঞ্চ আলো করে আন্দোলনের শরিকরা৷ ছোট্ট পায়েল বাগের বয়স এখন দশ৷ যাকে মায়ের কোলে ঢুকতে হয়েছিল হাজতে৷ দু’পাশে তাপসী মালিক ও রাজকুমার ভুলের মা-বাবাকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাকলেন সিঙ্গুরের ‘মাতঙ্গিনী’ বৃদ্ধা সরস্বতীদেবীকে৷ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ছবিপর্ব৷

Advertisement

তখন বিকেল৷ সিঙ্গুরের আকাশে সিঁদুরে মেঘ কালো হয়ে এল৷ নামল বৃষ্টি৷ গরমে হাঁসফাঁস থেকে মুক্তি৷ ঠিক যেমন জমি ফেরত আন্দোলনের জয়৷ মমতা ঠায় ভিজলেন৷ ভিজলেন তাঁর সঙ্গে লাখো লাখো মানুষ৷ উৎসব এমনই হয় বুঝি৷ মঞ্চে তখন গোটা তৃণমূল পরিবার৷ ছিলেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারাও৷

চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো বা বারাসতের কালীপুজোয় স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতেই যেমন আত্মীয়-পরিজনরা আসেন, এদিন সিঙ্গুরের সব গ্রামে ছিল সেই ছবি৷ বাজেমেলিয়া, খাসেরভেড়ির গ্রামগুলিতে সব বাড়িতেই বিভিন্ন জেলা এমনকী, কলকাতা থেকেও আত্মীয়রা দল বেঁধে এসেছিলেন মমতার এই সিঙ্গুর উত্সবের উৎসব দেখতে৷ জাতীয় সড়কের উপর যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একসময় ধরনায় বসেছিলেন, এদিনের মঞ্চও নির্মিত হয়েছিল সেখানেই৷ কিন্তু মমতা লক্ষ্য রেখেছিলেন যাতে কেউ সমস্যায় না পড়েন৷ অনুষ্ঠানের জন্য জাতীয় সড়কের একটি লেন বন্ধ থাকলেও অন্য লেনটিকেই দু’ভাগে ভাগ করে হালকা গাড়ি যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ একইসঙ্গে সিঙ্গুরের অনেক আগে থেকেই দিল্লি রোডকে ব্যবহার করা হয়েছিল ভারী যান চলাচলের জন্য৷ ভারী গাড়ি অনেক আগেই ঘুরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল জেলা প্রশাসন৷

এত বড় অনুষ্ঠান৷ কিন্তু কোথাও এক মুহূর্তের জন্য তাল কাটেনি৷ মানুষের কোনও ক্ষোভও ছিল না৷ সকলে সহাস্যে একদিনের জন্য মেনে নিয়েছিলেন এই ব্যবস্থা৷ কারণ এটা যে উৎসব৷ অ্যাম্বুল্যান্স যাওয়ার জন্য ওই ভিড়ের মধ্যেই অবশ্য রাস্তা বানিয়ে রেখেছিলেন মমতা৷ এমনকী, দু’-একটি অ্যাম্বুল্যান্স আটকে যাওয়ায় নিজে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে পরিষ্কার করে দেন অ্যাম্বুল্যান্সের রাস্তা৷ অন্যদিকে, দিনভর কেটেছে হরেকরকম বিকিকিনির মধ্যে৷ নানা মানুষ তৃণমূলনেত্রীকে মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে নানা বই, তাঁর জীবনী৷ আনন্দে মানুষ সাগ্রহে কিনেওছেন সেসব৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement