নিজস্ব চিত্র।
দেব গোস্বামী, বোলপুর: জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা (Jahangirer Swarnamudra) উদ্ধার করতে পানিহাটিতে ফেলুদা, তোপসে ও লালমোহন গাঙ্গুলীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন শঙ্করপ্রসাদ মিত্র। তাঁর সংগ্রহে থাকা ১২টি মুদ্রা চুরি হয়ে যায়। গল্পের শেষে সেগুলি উদ্ধারও করে দেন ফেলুদা। তবে এবার গল্পের বইয়ের পাতায় নয়, বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটল বীরভূমের (Birbhum) কীর্ণাহার ধ্রুববাটি গ্রামে।
ঠিক কী ঘটেছে? ধ্রুববাটির গল্প অবশ্য ফেলুদার মতো রহস্যে ভরপুর নয়। এখানে কোনও মুদ্রা চুরি যায়নি। ডাকতে হয়নি কোনও গোয়েন্দা। জমিদার বাড়ির উঠোনে গর্ত খুড়তেই পাওয়া গিয়েছে, কলসি ভর্তি মুঘল আমলের রুপোর মুদ্রা! স্থানীয় সূত্রে খবর, কীর্ণাহার গ্রামের জমিদার বংশ দত্ত বাড়ির উঠোনে জেসিবি দিয়ে মাটি খোড়ার কাজ চলছিল। সেই মাটি নিয়ে ফেলা হচ্ছিল পাশেরই একটি জায়গায়। মাটি ফেলার সময়ই উদ্ধার হয় কলসি ভর্তি রুপোর কয়েন। যা দেখে হতবাক প্রত্যক্ষদর্শীরা।
গ্রামের বাসিন্দাদের কেউ পেয়েছেন চারটি। কেউ আবার পেয়েছেন পাঁচটি মুদ্রা। বুধবার, খবর জানাজানি হতেই হুড়মুড়িয়ে মুদ্রা সংগ্রহের জন্য চলে আসেন গ্রামবাসীরা। ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। জমিদার পরিবারের বিশ্বজিৎ দত্ত জানান, “এটি আমার মামার বাড়ি। পুরনো বাড়ির উঠোনে জেসিবি দিয়ে পুকুর তৈরি করার কাজ চলছিল। সেই মাটি নিয়ে ফেলা হচ্ছিল চতুর্ভুজপুর ও জামনা যাওয়ার রাস্তার পাশে। ট্রাক্টরের সঙ্গেই চলে যায় দুটি কলসি ও রুপোর পুরনো মুদ্রাগুলি। আমরা এই বিষয়ে কিছুই জানি না। গ্রামবাসীদের মুখেই শুনছি এসব কথা। তবে আমাদের জমিদার পরিবারের অন্যতম সদস্য ছিলেন মুরারি মোহন দত্ত, অনাদি মোহন দত্ত ও কিশোরী মোহন দত্তরা। বংশের সদস্যরা এখন কীর্নাহার-সহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। কলসি ভর্তি রুপোর মুদ্রা থাকলেও অবিশ্বাস্য কিছু নয়।”
স্থানীয় বাসিন্দা কালী মোহন দাস ও বিপদতারণ মণ্ডল বলেন, “জমিদার বাড়ির মাটি কেটে রাস্তায় ফেলার পরই গ্রামবাসীদের চোখে পড়ে কলসি এবং রুপোর মুদ্রা। তবে দুটি কলসি চোখে পড়েনি। রুপোর মুদ্রাগুলি দেখা মাত্রই আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। অনেকেই তা সংগ্রহ করেছেন।” গ্রামবাসীদের মধ্যে কার কার কাছে রুপোর মুদ্রা আছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। অন্যদিকে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (Archaeological Survey of India) একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থলে আসবেন বলেও জানা গিয়েছে। মুদ্রাগুলির গায়ে আরবি ভাষায় লেখা। প্রত্যেকটি মুদ্রার ওজন প্রায় ১১ গ্রাম। দুটি কলসিতে কতগুলি মুদ্রা ছিল, জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে, উদ্ধার হওয়া মুদ্রাগুলি মুঘল আমলের বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.