সঞ্জীব মণ্ডল, শিলিগুড়ি: ট্র্যাভেল এজেন্সির আড়ালে প্রতারণার কারবার৷ দার্জিলিংয়ে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ৷ গাড়ির বিমা করানোর নামে ওই ব্যক্তি কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ৷ পুলিশের দাবি, গাড়ির বিমার শংসাপত্র বলে যা দেওয়া হত, তা ভুয়ো৷ দু’বছর পর তদন্তে চালিয়ে দীনেশ ঘিসিং নামে ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ৷ ধৃতের বাড়ি দার্জিলিংয়ে ডালি এলাকায়৷
দার্জিলিংয়ের সুপার মার্কেটে অভিযুক্তের ট্রাভেল এজেন্সির অফিস৷ সেই অফিস থেকে দীনেশ ঘিসিংকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৬ সালের মে মাসে প্রতারণা অভিযোগে দীনেশ ঘিসিং নামে ওই ব্যবসায়ীকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, একটি নামী বিমা সংস্থার কাছে গাড়ির ইনসিওরেন্স করিয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিত দীনেশ । দার্জিলিংয়ের ঘুমের বাসিন্দা মণি সুব্বার নামে দু’টি গাড়ির পলিসি করিয়ে দেয় সে। পাসাং নামে এক ব্যক্তি দীনেশ ঘিসিংয়ের কাছ থেকে ওই পলিসি করিয়ে আনেন। ওই পলিসির নথি জমা দিয়ে গাড়ি দুর্ঘটনার বিমার অর্থের আবেদন জানিয়েছিলেন মণি সুব্বা৷ কিন্তু বিমা সংস্থার সংস্থার তরফে ওই পলিসি খতিয়ে দেখার পর সাফ জানিয়ে দেয়, ওই পলিসি দুটি ভুয়া। বিমা সংস্থার আঞ্চলিক ম্যানেজার নন্দন মিশ্র দার্জিলিংয়ের সুখিয়াপোখরি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ মণি সুব্বাকে জেরা করে পাসাং নামে একজনের নাম পায়। তাকে জেরা করে জানা যায়, দীনেশ ঘিসিংয়ের কাছ থেকে ওই গাড়ির পলিসি করানো হয়েছে।
[জঙ্গলমহলে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কত? খতিয়ে দেখবে জুলজিক্যাল সার্ভে]
এরমধ্যে ওই মামলার তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকের অন্যত্র বদলি হয়ে যান। সুখিয়াপোখরি থানার ওসির দায়িত্ব পান স্পিকার হোসেন। তাঁর নেতৃত্বে দার্জিলিংয়ের সুপার মার্কটে অভিযানে ধরা পড়ে দীনেশ ঘিসিং। ওই ট্রাভেল এজেন্সিতে তল্লাশি চালিয়ে বিমা সংস্থার ও একটি স্কুলের প্রচুর রাবার স্ট্যাম্প, দু’টি হার্ডডিস্ক, পেনড্রাইড সহ প্রচুর ভুয়া নথি উদ্ধার হয়েছে। দার্জিলিংয়ের সিজেএম আদালতের সরকার পক্ষের আইনজীবী পঙ্কজ প্রসাদ জানিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তকে মঙ্গলবার আদালতের কাছে পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। বিচারক প্রিয়জিত চট্টোপাধ্যায় ধৃতের জামিনের আবেদন খারিজ করে তিনদিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত নিজেকে বিমা সংস্থার এজেন্ট বলে পরিচয় দিত। এরপর গাড়ির পলিসি করানোর নাম করে পুরো টাকাই হাতিয়ে নিত। বিনিময়ে কম্পিউটারে বিমা সংস্থার পলিসি তৈরি করে তাতে সিল, সই করে বিমাকারীকে নকল শংসাপত্র দিত সে । ওই পলিসির নথি নিয়ে যাঁরা বিমার অর্থ দাবি করতেন, তাঁরা কোনওদিন বুঝতেই পারতেন না তাঁদের গাড়ির আদতে কোনও পলিসিই হয়নি৷ যে পলিসির নথি নিয়ে তাঁরা ঘুরছেন তা আদতে ভুয়া। কিন্তু এধরনের দু’টি ভুয়া পলিসি বিমা সংস্থায় ক্ষতিপূরণের অর্থ দাবি করে আবেদন করতেই খেল খতম দীনেশের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.