সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: টানা লকডাউনে মুখ থুবড়ে পড়েছে শিলিগুড়ির অর্থনীতি। তিন মাসে ক্ষতি হয়েছে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা। কতদিনে এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতি সামাল দেওয়া সম্ভব হবে, তা বুঝে উঠতে পারছে না বণিক মহল। করোনা শিলিগুড়ির অর্থনৈতিক শিরদাঁড়াই ভেঙে দিয়েছে, মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় বণিক সভা ফেডারেশন অফ চেম্বার অফ কমার্স, উত্তরবঙ্গ (Federation of Indian Chambers of Commerce & Industry)-এর সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ” লকডাউনের প্রথমদিকে সম্পূর্ণ বন্ধ থাকলেও এখন সমস্ত ব্যবসাই শুরু হয়েছে। তবে ঘুরে দাঁড়াতে পারছেন না কেউই।” তাঁর কথায়, শিলিগুড়িতে প্রতিদিন গড়ে কুড়ি কোটি টাকা লেনদেন হয়। উত্তরবঙ্গ ধরলে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ প্রায় তিরিশ থেকে বত্রিশ কোটি টাকা। করোনা পরিস্থিতিতে যা সত্তর শতাংশ ঘাটতিতে চলছে। অর্থাৎ শিলিগুড়িতে এই মুহূর্তে পাঁচ-ছয় কোটি টাকা দৈনিক লেনদেনের বেশি হচ্ছে না। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গে পরিমাণ আট থেকে দশ কোটি টাকা।
শিলিগুড়িতে পণ্য পরিবহণে প্রতিদিন দু’শো গাড়ি বাইরে থেকে আসে এবং ফিরে যায়। নর্থবেঙ্গল রোড ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নিরঞ্জন আগরওয়াল জানিয়েছেন, “শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন দুই থেকে তিন কোটি টাকা মাল আমদানি-রপ্তানি হয়। যা এই মুহূর্তে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। পর্যটনের অবস্থাও তথৈবচ।” হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি সম্রাট সান্যাল আক্ষেপ করে জানিয়েছেন, “শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন তরাই-ডুয়ার্স এবং পাহাড়ে কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হয়, সেখানে এখন গোটা এলাকায় আমদানি শূন্য।” রেস্তরাঁ এবং ক্যাটারিং ব্যবসাতেও নেমেছে ধস। ক্যাটারিং সংগঠনের তরফে দুর্জয় ঘোষ জানিয়েছেন, গত তিন মাসে সমস্ত ক্যাটারিংয়ের বায়না বাতিল হয়ে গিয়েছে। রেস্তরাঁ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর খুললেও মানুষ ভয়ে সে দিক পা বাড়াচ্ছেন না। ফলে খরচ ওঠাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের। গোটা শিলিগুড়িতে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা হয় শুধুমাত্র রেস্তরাঁগুলিতেই। মুখ থুবড়ে পড়েছে তা-ও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.