সংগ্রাম সিংহ রায়, শিলিগুড়ি: শহরে পঞ্চাশ বছরের জমে থাকা জঞ্জাল বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিল শিলিগুড়ি পুরনিগম। এই উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই একটি বেসরকারি সার প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার প্রস্তুতি শুরু করেছে পুরনিগম কর্তৃপক্ষ। ওই সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই সূত্রের খবর। অল্পদিনের মধ্যেই পুরো বিষয়টি দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে মনে করছেন পুরনিগমের জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্ত।
[হাফিজুল মোল্লা খুনের মামলায় জামিন আরাবুল ইসলামের]
মেয়র পারিষদ বলেন, “শহরের ক্রমবর্ধমান জঞ্জাল, ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জমা করতে করতে পাহাড় সমান হয়ে গিয়েছে। প্রতিদিন গড়ে তিনশো টন আবর্জনা সারা শহর থেকে এসে জমা হয় ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। এই প্রকল্প চালু হলে পঞ্চাশ বছর ধরে জমে থাকা সলিড ওয়েস্ট বা কঠিন বর্জ্য অনেকটাই হালকা করে ফেলা যাবে বলে আমরা আশাবাদী। এই প্রকল্প চালু হলে শিলিগুড়ির জঞ্জাল অপসারণে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” দ্রুত প্রকল্প রূপায়নের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে তারাও একাধিক পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার অন্যতম কর্তা রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “শিলিগুড়ি পুরনিগমের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের সদর্থক আলোচনা হয়েছে। আমাদের প্রস্তাব খতিয়ে দেখে তা মঞ্জুর করেছেন পুরকর্তৃপক্ষ। আপাতত চুক্তির খসড়া তৈরি হচ্ছে। তাহলেই আমরা কাজ শুরু করে দেব।” আগামী এক মাসের মধ্যেই শহর থেকে জঞ্জাল সংগ্রহের কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
[রথের মেলায় চুরি, সাত মহিলা ছিনতাইবাজকে গ্রেপ্তার বনগাঁ পুলিশের]
জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় শহর থেকে প্রতিদিন চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ টন কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ করবে ওই সংস্থাটি। তারা দু’ভাবে এই বর্জ্যগুলিকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রথমত, এর একটা অংশ যেগুলির মধ্যে জৈব পদার্থ নিহিত আছে, এগুলি থেকে সার তৈরি করা হবে। বাকি বর্জ্যগুলিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য পদার্থে পরিণত করা হবে। শহর লাগোয়া কোনও জায়গাতেই এই প্রকল্প প্লান্ট তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এর ফলে শিলিগুড়ি শহরের দীর্ঘদিনের জন্য সমস্যার সমাধান হতে পারে। ধীরে ধীরে পুরনো জমে থাকা জঞ্জালগুলি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলে নতুন জঞ্জাল ফেলার জন্য আরও কিছু বাড়তি জায়গা মিলবে বলে মনে করছেন পুরকর্তা ও মেয়র পারিষদ। জঞ্জাল অপসারণে পাশাপাশি পুরনিগমেরও নিজস্ব কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে জমে থাকা জঞ্জালের কিছুটা লাঘব করা যায় সে বিষয়ে তাঁরাও আলোচনা করছেন। মেয়র পারিষদ মুকুলবাবুর দাবি, কেন্দ্র ও রাজ্যের স্বচ্ছ ভারত ও নির্মল বাংলা অভিযান তার অন্যতম সফল উদাহরণ হতে পারে এই জঞ্জাল অপসারণ প্রকল্প। পাশাপাশি এই জঞ্জাল সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুরনিগম কিছুটা আর্থিক সুরাহাও হবে। এই প্রক্রিয়া নিয়মিত চলতে থাকলে আরও বেশ কিছু বছর জঞ্জালের সমস্যা তীব্রতর হওয়া থেকে রুখে দেওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.