ছবিতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত জাইলো গাড়ি।
সঞ্জীব মণ্ডল, শিলিগুড়ি: ফের বেড়াতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে রাজ্যের পর্যটক। সিকিমে পথ দুর্ঘটনায় পাঁচ পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। নিয়্ন্ত্রণ হারিয়ে একটি জাইলো গাড়ি ২০০ ফুট গভীর খাদে পড়ে যায়। ভিতরে থাকা পর্যটকদের মধ্যে ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। ১৭জনের একটি দল দুটি জাইলো গাড়িতে করে সিকিমের কালুক থেকে গ্যাংটকে ফিরছিল। পথেই নয়াবাজার থানার রেশিতে প্রথম গাড়িটি বেরিয়ে গেলেও পরেরটি খাদে পড়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাখানেক বাদে তা স্থানীয়দের নজরে আসে। সঙ্গেসঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তারপর শুরু হয় উদ্ধারকাজ। প্রথম মনে করা হচ্ছিল সোমবার রাত ন’টার পরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। পরে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে দুর্ঘটনার সময় সম্ভবত রাত সাতটা থেকে ৭.৩০ মধ্যে। এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ। তবে রাস্তা খারাপের জন্য দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অথবা গতকাল রাতে খুব কুয়াশা ছিল রেশি সংলগ্ন এলাকায়। হয়তো জাইলো গাড়ির চালক সেই কুয়াশা ভেদ করে রাস্তা ঠিকঠাক দেখতে না পাওয়াতেই এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বলে পুলিশের অনুমান।
পুলিশ সূত্রের খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত জাইলো গাড়ির পর্যটকরা উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের নতুনপল্লির বাসিন্দা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিতে মোট সাতজন ছিল। তারমধ্যে পাঁচজনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃতরা হলেন, বিভাষ পাঠক(৪২), লিলি পাঠক(৫২), ব্রজেন্দ্রনাথ পাঠক(৭১), আশালতা পাঠক(৬১), নিহারেন্দু বিশ্বাস(৫৭)। আহতরা হলেন প্রতাপ বিশ্বাস(৪১), তুষারকান্ত পাঠক(৫৩)। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের নামচি হাসপাতালে ভরতি আছেন গাড়ি চালক অসীম রাজ।।
জানা গিয়েছে, পুজোর ছুটিতেই উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুর থেকে পর্যটকদের একটি দল পশ্চিম সিকিম বেড়াতে যায়। এদিন রাতে সিকিমের কালুক থেকে দু’টি জাইলো গাড়ি করে গ্যাংটকে ফিরছিলেন পর্যটকরা। প্রথম গাড়িটি পাহাড়ি রাস্তা অতিক্রম করলেও বিপদে পড়ে দ্বিতীয় গাড়িটি। সেটি ১০০ ফুট গভীর খাদে পড়ে যায়। আঘাতের ধাক্কায় সাদা রঙের গাড়িটি পুরো দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। প্রায় ঘণ্টাখানেক বাদে দুর্ঘটনার বিষটি স্থানীয়দের নজরে এলে তড়িঘড়ি উদ্ধারকার্য শুরু হয়। পুলিশ সুপার টি এল লেপচা জানিয়েছেন, জানিয়েছেন, পর্যটকরা দু’টি গাড়িতে ফিরছিলেন। একটি গাড়িতে থাকা পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। রাত ন’টা নাগাদ পাহাড়ি রাস্তায় কেন অতজন পর্যটককে নিয়ে চালক ফিরছিলেন সেটারই তদন্ত করছে পুলিশ। গাড়ির কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিকিমের পাহাড়ি রাস্তায় অধিকাংশ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেই গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটি একটি বড় কারণ হয়। সোমবার সিকিমের আবহাওয়া ভালই ছিল। ফলে রাস্তায় ধস বা বৃষ্টির জন্য ব্রেক না ধরার সম্ভাবনা ছিল না বললেই চলে। তবে ১৭জনের দলের প্রথম গাড়িটির কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। বেলা বাড়লে খোঁজখবর শুরু হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.