ছবি: প্রতীকী
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: কয়লা খাদান বন্ধের দাবিতে বচসা। আর সেই বচসার জেরে সোমবার রাতে প্রাণ গেল এক যুবকের। গুলিবিদ্ধ আরও একজন কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় বীরভূমের (Birbhum) মহম্মদবাজারের হাবড়া পাহাড়ি গ্রামে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বহিরাগতের গুলিতে প্রাণ গিয়েছে স্থানীয় যুবকের। ইতিমধ্যে আততায়ীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, “অভিযুক্ত ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। এলাকায় দেউচা পাঁচামি বিরোধী আন্দোলনের এক নেত্র্রী বাড়িতে যাতায়াত ছিল তার।” যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই নেত্রী।
মৃতের নাম ধনা শেখ (৪০)। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। পেশায় কয়লা খাদানের ড্রিলিং ম্যান ছিলেন তিনি। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ধানু হাঁসদা (৪০)। পেশায় শিক্ষক। তাঁকে প্রাথমিকভাবে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই চিকিৎসা চলছে। এই ঘটনার জেরে থমথমে গোটা এলাকা। টহল দিচ্ছে পুলিশবাহিনী ও ব়্যাফও। তবে কেন গুলি চলল, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা সাইমন হাঁসদা জানিয়েছেন, “এলাকায় আত্মীয় বেড়াতে এসেছিলেন রাজনগরের এক যুবক। সন্ধেয় আমার বাড়িতে এসে ডেকে নিয়ে যায়। বলে কিছু কথা আছে, বাইরে কথা বলব। গিয়ে দেখি সেখানে ধনা-ধানুরা গল্পগুজব করছে। আরও কয়েকজন ছিল। সেইসময় বলা হয়, এলাকায় কয়লা খাদান বন্ধ করতে হবে। ভয় দেখিয়ে স্বাক্ষর করতে বলে ওই যুবক। এনিয়ে বচসা শুরু হয়। সেখানে গুলি চলে। দুজন গুলিবিদ্ধ হয়।” এদিকে গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, ওই যুবক গ্রামে কার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল সেটা স্পষ্ট নয়। গুলির শব্দ পেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। এপ্রসঙ্গে গ্রামেরই বাসিন্দা লালচাঁদ মুর্মু জানান, পরপর দুটি শব্দ শুনেছিলাম। ভেবেছিলাম টিনের চালে ইট পড়ছে। এরপর দেখি বাড়ার সামনে থেকে ছুটে চলে যায় এক যুবক। গ্রামবাসীদের দাবি, ক্লাব ঘরের পাশে একটি সাইকেল রাখা ছিল। তাতে চড়ে অন্ধকারে গাঢাকা দেয় অভিযুক্ত। গ্রামবাসীরা অভিযোগ দায়ের করেছে। গ্রামে পুলিশের ক্যাম্প করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। গ্রামে দেউচা পাঁচামি খনি বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত সাদি হাঁসদার বাড়িতে ১০ দিন আগেও এসেছিলেন তিনি। সোমবার বিকেলে চারটের তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন অভিযুক্ত। তারপর দুপক্ষ ক্লাবের পাশে বসে মদ খাচ্ছিল। সেখানেই ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা গেলেও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা হওয়ায় গ্রেপ্তার করা যায়নি। তল্লাশি চলছে। যদিও সাদি হাঁসদা অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে তিনি চিনতেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.