সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: চরম অমানবিকতার নিদর্শন! মৃতের সঙ্গেই জীবিতদের পাঠানো হল বাংলায়। উত্তরপ্রদেশের দুর্ঘটনায় মৃত ছয় শ্রমিকের দেহের সঙ্গেই তিন পরিযায়ী শ্রমিককে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মৃতের সঙ্গে ১২ ঘন্টা সওয়ার বাংলার তিন পরিযায়ী শ্রমিক। অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশ সরকার জখম তিন পরিযায়ী শ্রমিককে মৃতদের সঙ্গে চেপে যেতে বলে। রবিবার সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা। পরে রাত আটটা নাগাদ এলাহাবাদ বাইপাসের কাছে মৃতদেহ ও তিন পরিযায়ী শ্রমিককে অন্যত্র সরানো হয়।
প্রসঙ্গত, পূর্বের ঘোষনা মতো রাত আড়াইটার সময় মোঘলসরাই থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার অর্থাৎ পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন দেহ হাতে নেয়। সেই সঙ্গে জখমদেরও দায়িত্ব নিয়ে নেয়। সেখান থেকে দুটো বাতানুকূল অ্যাম্বুল্যান্স, দুটো ছোট গাড়ি ও পুলিশের এসকর্ট দিয়ে নিয়ে আসে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। উত্তরপ্রদেশ সরকারের অমানবিকতাতে ক্ষোভ বাংলার তিন শ্রমিকের। প্রায় পচে যাওয়া, দুর্গন্ধযুক্ত মৃতদেহর সঙ্গে তাঁদের প্রায় ১২ ঘন্টা বসে থাকতে হয়। এই ছবি সোশ্যাল সাইট এ ভাইরাল হয়ে যায়।
শিবু কর্মকার, কৈলাস মাহাতো এবং গোপাল মাহাতো। উত্তরপ্রদেশের দুর্ঘটনায় তিন জখম শ্রমিকের বাড়ি পুরুলিয়াতেই। অভিযোগ, মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের পর একটি ট্রাকে তুলে দেওয়া হয় এবং এঁদের তিনজনকেও সেই গাড়িতে তুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ১২ ঘণ্টা পথ পেরিয়ে মোঘলসরাইয়ের কাছে যখন পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন তাঁদের দায়িত্ব নেয়, নিজেদের ক্ষোভের কথা তাঁদের জানান শিবু, কৈলাসরা। এই বিষয়ে উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদের জেলা আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে রাজ্য সরকার। কেন এমন অব্যবস্থার মধ্যে মৃতদেহের সঙ্গে জীবিতদের পাঠানো হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দোপাধ্যায় বলেন, “অমানবিকতার চরম নিদর্শন! বিজেপি সরকার আরও একবার প্রমাণ দিল, তারা পরিযায়ীদের কতটা অবহেলার চোখে দেখে। কেন্দ্রীয় সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউনের জন্য দেশজুড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের নানান মর্মস্পর্শী ছবি দেখা যাচ্ছে।” জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “আমরা মোঘলসরাই থেকে মৃতদেহ ও তিন জখম শ্রমিককে হাতে নিই। ওখান থেকে মৃতদেহ গুলি এসি অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে আনা হয়। জখমরা আমাদের পাঠানো কনভয়ের অন্য ছোট গাড়িতে আসেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.