সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আনন্দ সকলের মাঝে ভাগ করে নেওয়াতেই তো উৎসবের সার্থকতা। বছরে একবার বাঙালির সেরা উৎসব ঘিরে আনন্দের ভাগ যাতে ছিঁটেফোঁটা কম না পান কোনও মানুষ, সেদিকে কড়া নজর রাখেন কেউ কেউ। বিশেষ দিনগুলোতেও যাতে মলিন বস্ত্রে, বিষণ্ণ মনে ঘুরতে না হয়, তেমন ব্যবস্থাও করা হয়। এবছর সুন্দরবন এবং মেদিনীপুরের বনাঞ্চলে বসবাসকারী দরিদ্র মানুষজনের মুখে হাসি ফোটাতে এগিয়ে এল ব্যাঘ্র সংরক্ষণ সংস্থা – শের। মেদিনীপুরের পিড়াকাটা এবং সুন্দরবনের কুমিরমারিতে অন্তত ৮০০ জনের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নতুন বস্ত্র। এক সপ্তাহব্যাপী এই কর্মসূচির মূলটি হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে। শের-এর এই সাধু উদ্যোগের সঙ্গী ছিলেন পরিচালক অরিন্দম শীল, অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, রিয়া বণিক। নতুন জামা পেয়ে ছোটদের মুখে আলোর ঝিলিক, বড়রা খুশি।
পিড়াকাটা কিংবা কুমিরমারি কিংবা সুন্দরবন বা লালগড়ের জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় সবসময়েই মানুষ-বন্যপ্রাণের লড়াই চলেই। নিত্যদিনই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার বা হাতি কিংবা কুমিরের মতো হিংস্র জন্তুর সঙ্গে লড়াই করে জীবন কাটাতে হয়। তাই শের এমন এলাকার মানুষজনের কাছেই পৌঁছে গিয়েছে, তাদের উপহারের ডালি নিয়ে। এসব জায়গা যে সহাবস্থানের উদাহরণ রাখে, সেই চিত্রই তুলে ধরে রাখতে চান শের-এর সদস্যরা।এমনিতে ব্যাঘ্র সংরক্ষণই মূল লক্ষ্য হলেও, শের পরিবেশ রক্ষায় বহু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। এর কর্ণধার জয়দীপ কুণ্ডু নিজে পশ্চিমবঙ্গের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ নিয়ে তৈরি বোর্ডের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। পরিবেশ সচেতনতায় স্কুল পড়ুয়াদের শামিল করে বিশ্ব পরিবেশ দিবসেও নানা অনুষ্ঠান করেছেন শের। এবার পুজোকে সামনে রেখে সমাজকল্যাণমূলক অন্য একটি কাজে নামল এই সংস্থা।
গত সোমবার থেকে শের-এর তরফে শুরু হয়েছে শারদোৎসবের উপহার বিতরণ কর্মসূচি। কখনও মেদিনীপুরের পিড়াকাটা, কখনও সুন্দরবনের কুমিরমারি, কখনও উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের প্রত্যন্ত জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় গিয়ে তাঁরা পরিবারগুলির হাতে তুলে দিয়েছেন জামাকাপড়। এভাবে অন্তত ৮০০টি পরিবারকে পুজোয় নতুন বস্ত্র গায়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছেন। গত শুক্রবার বসিরহাটের মূল অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন সেখানকার রেঞ্জ অফিসার বিপ্লব ভৌমিক, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিরেক্টর নীলাঞ্জন মল্লিক, বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ সংস্থার অন্যতম আধিকারিক সুচন্দ্রা কুণ্ডু, শের-এর সহ-সভানেত্রী মন্দিরা সামন্ত এবং পশ্চিমবঙ্গ বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ বোর্ডের সদস্য তথা শের-এর প্রতিষ্ঠাতা জয়দীপ কুণ্ডু। সঙ্গে ছিলেন অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, পরিচালক অরিন্দম শীল। তাঁরাই সকলের হাতে তুলে দেন এক ব্যাগ নতুন সামগ্রী। এভাবেই শের উৎসবের আলো ছড়িয়ে দিল আঁধারে থাকা কয়েকজনের জীবনে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.