Advertisement
Advertisement

Breaking News

Shantipur

টোটো চালিয়েই এমএসসি পাশ, ধরেছেন সংসারের হালও, আরও বড় হওয়ার স্বপ্ন শান্তিপুরের দেবীর

দেবীকে কুর্নিশ করছেন প্রতিবেশীরাও।

Shantipur's Devi passes MSC while driving a Toto, takes care of her family, dreams of becoming even bigger

চালকের আসনে দেবী রায়। নিজস্ব চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:March 8, 2025 6:11 pm
  • Updated:March 8, 2025 6:11 pm  

সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: স্বপ্ন ছিল অনেক দূর পড়াশোনা করে বড় হবেন। কিন্তু পারিবারিক আর্থিক অনটনের কারণে বিয়ে করতে হয়। শ্বশুরবাড়িতে গিয়েও যে হাল ফিরবে, তেমনটা হয়নি। কারণ, স্বামী দিনমজুরের কাজ করেন। ফলে শেষপর্যন্ত সংসারের হাল ধরতে তিনিও টাকা রোজগার শুরু করেন। শুরু করেন টোটো চালানো। সেই উপার্জনে কেবল সংসারই নয়, নিজের পড়াশোনাও চালিয়েছেন। এমএ পাশ করে আগামী দিনের স্বপ্ন দেখছেন শান্তিপুরের দেবী রায়।

নদিয়ার হবিবপুরে বাপেরবাড়ি দেবী রায়ের। সেসময় কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। পাঁচবছর আগে প্রায় নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়েই পরিবারের কথায় বিয়ে করেন তিনি। শান্তিপুরের কৃষিপল্লি এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে এরপর তাঁর নতুন জীবন শুরু। স্বামী অমৃত বারুই দিনমজুরের কাজ করেন। কোনওরকমে সংসার চলে তাঁদের। এদিকে পড়ার জন্য ব্যাকুল দেবী। ফলে চোয়াল শক্ত করে ঠিক করেন নিজেই উপার্জন করবেন। একসময় স্বামীর মতও মিলে যায়।

Advertisement

এরপরই কোনওরকমে টাকা জোগাড় করে কিনে ফেলেন একটি টোটো। আর সেই গাড়ি নিয়ে প্রতিদিন এরপর স্ট্যান্ডে গিয়ে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করা। একটু একটু করে উপার্জন বাড়তে থাকে। নিজের পড়াশোনার খরচ নিজেই জোগাড় করতে থাকেন। এভাবেই তিনি শান্তিপুর কলেজ থেকে ভালো নম্বর  নিয়ে ভূগোলে স্নাতক হন। তারপর শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা। এদিকে টোটো চালিয়ে দিনের উপার্জনও বেড়েছে। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষাতে গাড়ি নিয়ে তিনি বেরিয়ে পড়েন। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই রুটিনের বদল হয়নি। আর সেই সুবাদে সংসারের আর্থিক সুরাহাও হতে থাকে।

নিজের রোজগারে স্নাতকোত্তরে ভালো নম্বর নিয়েও পাশ করেন দেবী। এখনও তিনি টোটো চালান। দেবী রায় বলেন, “এত শিক্ষিত হয়েও টোটো চালাব কখনও ভাবিনি। কিন্তু কোনও কাজই তো ছোট নয়, নিজের স্বার্থে আমি এই কাজটা করছি। ইচ্ছাশক্তিকে মর্যাদা দিয়ে আমি কোনও দিকে কান না দিয়ে নিজের কাজ করে যাচ্ছি।” অন্যদিকে দেবী রায়ের স্বামী অমৃত বারুই বলেন, “আমি সবসময় স্ত্রীকে সমর্থন করি। আর্থিক অনটনের কারণে ও নিজেই নিজের কাজ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে। আমিও পিছপা হইনি। ও নিজের অর্থ উপার্জন করে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। আমি গর্বিত।”

তিনি চাকরির জন্য চেষ্টা করছেন। ভালো চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত তিনি টোটো চালাবেন বলে জানিয়েছেন দেবী। অন্যদিকে প্রতিবেশীরাও বাহবা জানিয়েছেন দেবী রায়কে। যেভাবে তিনি উপার্জন করে সাফল্য ছিনিয়ে আনছেন, তাতে কুর্নিশ করেছেন প্রতিবেশীরাও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement