ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: এ যেন এক অন্য পঁচিশে বৈশাখ। ছন্দ হারিয়েছে চেনা রবীন্দ্রজয়ন্তীর শান্তিনিকেতন। পড়ুয়াদের মধ্যে নেই সেই উন্মাদনা। লকডাউনে বড় ফাঁকা কবিগুরুর ঠিকানা। ব্যতিক্রমী পন্থায় রবীন্দ্রজয়ন্তী পালিত হল শান্তিনিকেতনে। মনখারাপ পড়ুয়াদের।
নাচ হবে। হবে গান। সঙ্গে থাকবে আবৃত্তি ছাড়াও আরও কত কী! কিন্তু এ বছর যেন বড়ই ফাঁকা। রবীন্দ্র জয়ন্তীতে নেই গান, নাচের মতো কোনও সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান। সারাবছর প্রায় রবীন্দ্র জয়ন্তীর জন্য অপেক্ষা করে থাকেন শান্তিনিকেতনের পড়ুয়ারা। কিন্তু এবার বসন্তোৎসবের মতো হল না রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনও। বসন্তোৎসব বাতিল হওয়াতেও কেঁদে ভাসিয়েছিল পড়ুয়ারা। এবারও সেই একই অবস্থা। রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন না হওয়ায় ভারাক্রান্ত মনের সম্বল শুধুই চোখের জল। কোনওদিনও রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান বাতিল হয়েছে তা অনেক ভাবনাচিন্তা করেও বলতে পারছেন না কেউ। কিন্তু করোনা ভাইরাসের দাপটে সিদ্ধান্তে এমন বদল। তাই তো বসন্তোৎসবের পর আবারও ছেদ পড়ল ঐতিহ্যে। হল না ঘটা করে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন।
যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে আদৌ রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনে কোনও অনুষ্ঠান হবে কি না, তা নিয়ে জটিলতা ছিল। তবে শুক্রবার সেই জটিলতার নিষ্পত্তি। এই প্রথমবার কোনও অনুষ্ঠান ছাড়াই শান্তিনিকেতনে পালিত হল রবীন্দ্রজয়ন্তী। শুক্রবার সকালে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী প্রথমে উপাসনা মন্দির এবং ছাতিমতলায় পুষ্প অর্পণ করেন। পরে রবীন্দ্রভবনের উদয়গৃহে রবীন্দ্রনাথের চেয়ারে মালা দেন। শোনানো হয় রবিকন্ঠ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক এবং কর্মী। লকডাউনে বদলে গিয়েছে প্রত্যেকের জীবন। একেবারে অন্যরকম রোজনামচায় দিন কাটছে সকলের। রবীন্দ্রযাপনের জন্য তাই শান্তিনিকেতনবাসীকে অপেক্ষা করতে হবে আরও একটা বছর। করোনার নিকষ কালো অন্ধকার কেটে হয়তো আগামী বছর আবারও পুরনো ছন্দে পালিত হবে রবীন্দ্রজয়ন্তী, এই আশা করছেন সকলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.