দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: কম খরচে লেখাপড়া, সবার জন্য কাজ আর বেকার ভাতা। মূলত এই তিনটি দাবিকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার বৃষ্টিভেজা দিনে সিঙ্গুর থেকে মিছিল শুরু করল বাম ছাত্র-যুব সংগঠনগুলি। আজ সন্ধ্যায় ডানকুনিতে শেষ হবে পদযাত্রা। এরপর কাল অর্থাৎ শুক্রবার হাওড়া থেকে মিছিল রওনা দেবে নবান্নর উদ্দেশে।
সিঙ্গুর থেকে নবান্ন পর্যন্ত এই অভিযানের জন্য টানা একমাস ধরে প্রচার চালিয়েছে ডিওয়াইএফআই ও এসএফআই। এমনকী সিঙ্গুরের বাসিন্দাদের বাড়িতে রাত্রিবাস করে জনসংযোগ এবং প্রচার চালিয়েছে। কারণ ওই দুটি সংগঠনের মতে, চাকরির আবেদনপত্রে যেমন স্নাতকরা আবেদন করেছেন, তেমনি উচ্চশিক্ষিত এমনকী ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রিধারীরাও আবেদন করছেন।
এপ্রসঙ্গে ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্র বলেন, ‘রাজ্যে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য বারবার সরকারকে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু, কোনও ফল হয়নি। উলটে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির ফলে রাজ্য থেকে একটার পর একটা সরকারি ক্ষেত্র বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারের ভূমিকাও সদর্থক নয়। এই অবস্থার বদল চেয়েই এই পদযাত্রা। আগামীকাল নবান্নে ডেপুটেশনের কর্মসূচি আছে।’
বামদের অভিযোগ, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের কর্মসংস্কৃতি তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বেকার সমস্যা এতটাই বেড়েছে একটু সুযোগ পেলেই বাইরের রাজ্যে চলে যাচ্ছে সবাই। বিরোধীরা বারবার বিষয়টি নিয়ে সরব হলেও পাত্তা দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। বামদের সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল তখন সিঙ্গুরে টাটা কারখানার কাজ চলছিল। কিন্তু, তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে গিয়ে ওই প্রকল্পের বিরোধিতা করেন। তাঁর অনশন ও আন্দোলনের জেরে বন্ধ হয়ে যায় টাটার প্রকল্প। আর তারপরই পশ্চিমবঙ্গ থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেন বিনিয়োগকারীরা। পরবর্তীকালে মমতা স্বয়ং ক্ষমতায় এসে বারবার বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানালেও কেউ সাড়া দেয়নি। এর ফলে রাজ্যে বেকারত্বের সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। আর এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্যই আন্দোলন করছে তারা।
এদিকে বৃহস্পতিবার কলকাতার সমাবেশ থেকে ফের বামেদের সঙ্গে নিয়ে চলারই বার্তা দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে রাজ্যে কংগ্রেসের যা অবস্থা তাতে আমরা একা লড়াই করতে পারব না। বিজেপি ও তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করার জন্য বামেদের সঙ্গেই চলতে হবে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.