সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: দৈহিক সৌন্দর্য্যহানির আশঙ্কায় শিশুদের মাতৃদুগ্ধ পান করতে চান না সিংহভাগই শহুরে দম্পতিই৷ গ্রাম বাংলার ছবিটা অবশ্য একেবারেই আলাদা৷ হতদরিদ্র পরিবারে শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পান করাতে চাওয়াটা বিলাসিতা বই আর কিছু নয়৷ কারণ, সন্তান বুকে দুধ খাওয়াতে গেলে মাকে যে বাড়িতে থাকতে হবে! টান পড়বে রোজগারে৷ কিন্তু, শেষপর্যন্ত দারিদ্র্যই যেন আর্শিবাদ হয়ে গেল হাওড়ার উলুবেড়িয়ার কয়েক হাজার শিশুর কাছে৷
কৌটোর দুধ কেনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ এখন মাতৃদুগ্ধ খাইয়েই সন্তানকে বড় করতে চাইছেন উলুবেড়িয়া মহকুমার একটি বড় অংশের মহিলারা। গত কয়েক বছর ধরে এই প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন শিশু চিকিৎসকরা । চিকিৎসকরা লক্ষ্য করেছেন, মহিলাদের মানসিকতা বদলে সবচেয়ে বড় কারণ হল দারিদ্র! স্রেফ টাকার ্ অভাবে কৌটোর দুধ কিনতে পারছেন না উলুবেড়িয়া মহকুমার প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা ৷ দ্বিতীয় কারণটা অবশ্যই সচেতনতামূলক প্রচার।
হাওড়ার উলুবেড়িয়া মহকুমার ৭০ শতাংশেরও বেশি গ্রামাঞ্চল৷ বাসিন্দাদের সিংহভাগই কৃষিজীবী নয়তো শ্রমজীবী। একেবারেই নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা৷ কৌটার দুধ আর কিনবেন কী করে! শিশুদের খাওয়ানোর জন্য ভরসা মায়ের বুকে দুধ। দারিদ্র্য কখনই কাম্য নয়৷ কিন্তু, অভাবের কারণেই যে শিশুরা মাতৃদুগ্ধের স্বাদ পাচ্ছে, তাও অস্বীকার করা যাবে না। সুস্থ, সবল হয়ে বেড়ে উঠছে তারা। ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স-এর চেয়ারম্যান ডাঃ অনুপ কুমার মঙ্গলের মতে, দারিদ্র্যই যেন আর্শিবাদ হয়ে গিয়েছে শিশুদের কাছে।
তিনি জানান, উলুবেড়িয়া মহকুমার বেশকিছু বেসরকারি নার্সিংহোমেও কৌটোর দুধ প্রবেশ করা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কমেছে ব্র্যান্ডেড কৌটার দুধের বিক্রিও। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মতে, সরকারি ও বেসরকারি স্তরে মাতৃদুগ্ধ পানের উপকারিতা সম্পর্কে প্রচারের কারণেই শিক্ষিত মায়েদের মধ্যে কিছুটা হলেও সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষিত সমাজের একটা অংশও শিশুদের মাতৃদুগ্ধ পান করানোর গুরুত্ব অনুভব করছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.