অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, কালিম্পং: রাতভর ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে হরপা বান। আর তাতেই ধসে ক্ষতিগ্রস্থ একটি গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে গোটা গ্রাম। ব্যাহত হয়েছে সেভক রঙপো প্রকল্পের কাজও। যদিও হরপা বান ও ধসের কারণ হিসেবে সেবক-রংপো রেল প্রকল্পকেই দায়ী করেছে পাহাড়বাসীরা।
রবিবার রাত থেকে তরাই-ডুয়ার্স সহ গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে শুরু হয়ে ভারী বৃষ্টিপাত। আর সেই বৃষ্টিপাতের জেরে কালিম্পং জেলার রম্ভি এলাকায় নামলো ধস। ধসের জেরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ-সহ রন্দি বাজার নামের গ্রামের একাধিক বাড়ি। ব্যাহত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সেবক-রংপো রেল প্রকল্পের কাজ। সেখানে প্রকল্পের দ্বিতীয় রেল স্টেশন রিয়াংয়ের স্টেশন ইয়ার্ড তৈরির কাজ চলছে। বৃষ্টির জেরে সেই কাজও ব্যাহত হয়েছে। তবে হরপা বান ও ধসের জন্য রেল প্রকল্পকেই দায়ী করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা৷ তাঁদের অভিযোগ, যেভাবে গ্রামের কথা চিন্তা না করে রেল প্রকল্পের কাজ চলছে তাতেই ক্ষতি হয়েছে। পাহাড় থেকে নেমে আসা জল নিকাশির মাধ্যমে বের করার কোনও জায়গা করা হয়নি। এমনকী প্রকল্পের কাজের সময় বড়বড় যন্ত্র চলার ফলে বেশ কয়েকটি বাড়ি আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার বর্ষার আগে ধস আটকানোর কোন ব্যবস্থাই করা হয়নি। যার জেরে আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। যদি অবিলম্বে পদক্ষেপ না করা হয় এবং আরও বৃষ্টি হলে গোটা গ্রাম ধসে চাপা পরে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধসের জেরে কর্ণ বাহাদুর ছেত্রী, পাপ্পু খাতি ও গিতা সিলাল নামে তিনজনের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পর উদ্ধারকাজে নামে বিপর্যয় মোকাবিলা দল।
এই বিষয়ে কালিম্পংয়ের জেলাশাসক আর বিমলা বলেন, “ইতিমধ্যে বিপর্যয় মোকাবিলা দল উদ্ধার কাজে নেমেছে। বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে ধস আটকাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।” দীপসোনি সিলাল বলেন, “সারা রাত আতঙ্কে কাটিয়েছি। আর একটু বৃষ্টি হলেই বাড়ি ধসে যেতো। ছোটছোট বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় যাব ভেবে পাচ্ছি না।” স্থানীয় বাসিন্দা রাজেন মুখিয়া বলেন, “এই ধসের জন্য সেবক-রংপো রেল প্রকল্প দায়ী। আমরা বহুবার বলেছি গ্রামের জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু তা করা হয়নি৷ রেল প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার অরুন বরণ পাত্র বলেন, “এইধরণের প্রবল বৃষ্টি হবে তা আমরা ভাবতে পারিনি। তবে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.