সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: শ্মশানের পর এবার ফাঁকা মাঠে বটগাছের তলায় একটি ছোট্ট তাঁবুতে গাদাগাদি করে দিন কাটাচ্ছেন সাত পরিযায়ী শ্রমিকরা। গ্রামের অদূরে তাঁদের পুকুরেও যাওয়া নিষিদ্ধ।এমনকি কুয়ো থেকেও জল তোলা নিষিদ্ধ। খাবার ভাগ করে খাচ্ছেন সাতজন। হাতির যাতায়াতের পথে ফাঁকা জায়গায় এই তাঁবুতে রাত পাহাড়া দিচ্ছেন তাঁদেরই কয়েকজন।গাছে ঝুলিয়ে রাখচ্ছেন খাবার।প্রশাসন তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেনি বলে ওই সব শ্রমিকরা অভিযোগ করছেন। ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে গাছের নিচেই বসবাস করছেন তাঁরা। এই ঘটনা বেলপাহড়ির শিমূলডাঙা গ্রামের।
পরিযায়ী শ্রমিকরা জানান, গত ৩ মে তাঁরা ওড়িশা থেকে ফিরেছেন। বেলপাহাড়ি থানার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা এই সাত পরিযায়ী শ্রমিক। শিমূলডাঙা, কেন্দাপড়া, সন্ধ্যাপাড়া, বেলপাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দা তাঁরা। ৩ মে তাঁরা ফিরে বেলপাহাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরীক্ষা করান। কিন্তু গ্রামে ফিরতে পারেননি। কারণ গ্রামবাসীরা ভিন রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের গ্রামে থাকতে দেননি। তাঁরাও জোর করেননি। শ্রমিকদের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের আলাদাভাবে রাখা বা খাবারের কোনও ব্যবস্থাই করেনি। তাই বাধ্য হয়ে বটগাছের নিচে তাঁরা আছেন। পালা করে রাতে পাহাড়া দিচ্ছেন। কারণ এই এলাকা দিয়ে হাতি প্রায়শই যাতায়াত করে। এক কিমি দূরে গ্রাম থেকে কয়েকজনের খাবার আসে। সেই খাবার কোনওরকমে খেয়ে রয়েছেন তাঁরা।পুকুর বা কুয়ো ব্যবহার করা বারণ। তাই পার্শ্ববর্তী নদীতে স্নান করতে যান তাঁরা।
একদিকে হাতি, সাপের ভয় আবার তার রোদবৃষ্টি মাথায় নিয়ে গাছের তলায় থাকছেন সাতজন। পরিযায়ী শ্রমিক রঞ্জিত নায়েক ও শংকর নায়েক বলেন, “৩ মে থেকে এইভাবে এক সঙ্গে সাতজন রয়েছি। প্রশাসনের কোনও সাহায্য পাইনি। বটগাছের নিচেই রয়েছি। গ্রামের পুকুর, কুয়ো ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। নদীতেই স্নান করছি। এক কিমি দূর থেকে খবার আসে। দূরে রেখে দিয়ে যায়। ওই খাবরই ভাগ করে খাচ্ছি। স্থানীয় একজন একটি ত্রিপল দিয়েছিল। তাই দিয়ে আমরা নিজেরেই তাঁবু খাটিয়ে রয়েছি।” এই বিষয়ে বেলপাহাড়ির বিডিওকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। অন্যদিকে বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাহালা হাঁসদা বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.