ছবি: প্রতীকী
অরিজিৎ গুপ্ত: হাওড়ার (Howrah) এম সি ঘোষ লেনে একই পরিবারে চারজনকে খুনের ঘটনায় সম্পত্তিগত বিবাদের পাশাপাশি উঠে আসছে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের তত্ত্বও। তদন্তের শুরু থেকে হাওড়া থানার পুলিশ আধিকারিকদের একটি বিষয় খুব ভাবাচ্ছিল, তা হল শুধুমাত্র সম্পত্তিগত বিবাদের জেরে এত নৃশংসভাবে খুন কী করে? আর এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, বাবা শিশিরকুমার ঘোষের সম্পত্তি পাওয়ার জন্য দাদা দেবাশিসের সঙ্গে দেবরাজের নিত্য অশান্তি হত। বদমেজাজি দেবরাজ বাড়িতে ভাঙচুর ও মা, বাবা, দাদাকে মারধরও করত। কিন্তু দেবরাজকে সঙ্গ দিয়ে তাঁর স্ত্রী পল্লবী কীভাবে চার জনকে কুপিয়ে খুন করল? আর এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই পুলিশ পল্লবীর সম্পর্কেও বহু তথ্য জানতে পেরেছে। উঠে এসেছে দেবরাজের দাদা দেবাশিসের সঙ্গে পল্লবীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথাও।
পুলিশ সূত্রে খবর, দেবরাজ তিনতলা বাড়ির পুরোটাই দখল করা নিয়ে অশান্তি করত। পাশাপাশি দেবরাজের স্ত্রী পল্লবীর সঙ্গে তার দাদা দেবাশিসের সম্প্রতি একটি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পুলিশ জানতে পেরেছে, পেশায় গাড়িচালক দেবাশিস ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ভাই ও পল্লবীকে রীতিমতো টাকা দিত। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বুধবার রাতে তেমনই দেবরাজ ও পল্লবীকে ২ হাজার টাকা দিতে চেয়েছিল দেবাশিস। একদিকে সম্পত্তি নিয়ে যখন বিবাদ চলছে, তখন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে টাকা লেনদেন করতে গিয়ে বিবাদ বেড়ে যায়। প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে পল্লবী। তখন সেও স্বামী দেবরাজের সঙ্গে দেবাশিসকে গিয়ে খুন করে। শুধু খুন করা নয়, দেবাশিসের উপর রাগে তাঁকে কুপিয়ে পল্লবী তার যৌনাঙ্গ কেটে নেয় বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, দেবাশিসের স্ত্রী রেখা ঘোষও তাঁর স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা কিছুটা আঁচ করেছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তাকেও কুপিয়ে খুন করা হয়। মৃত রেখাদেবী হাওড়া জুটমিলের ভিতরে কাপড়ের গোডাউনে কাজ করতেন।
দেবরাজের জেঠিমা স্বপ্না ঘোষ বৃহস্পতিবার জানালেন, প্রায়দিনই তাঁর ভাইপো ও ভাইপো-বউ সম্পত্তির ভাগ নিয়ে মা-বাবা, দাদা-বউদির সঙ্গে মারপিট করত। বুধবার রাতে তা চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছয়। তাঁর কথায়, ‘‘দেবরাজ অনেকদিন আগে থেকেই বাবা ও মায়ের বাড়ি, সম্পত্তি নেবে বলে অশান্তি পাকাত।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.