নন্দন দত্ত, সিউড়ি: গঙ্গার গরম জল খেলে পেটের রোগ সারে। এই বিশ্বাসে শীতভর বক্রেশ্বর উষ্ণ প্রস্রবণে ছোটেন মানুষ। আর জল পানের সঙ্গে সপ্ত গঙ্গার গরম জলে স্নান করা যায় বিনা পয়সায়। জানুয়ারির শুরুতে শীত জাঁকিয়ে পড়তেই বীরভূমের বক্রেশ্বরে উপচে পড়া পর্যটকদের ভিড়। সবাই চাইছেন একবার জলস্পর্শ করতে।
[শ্রমিককে কান ধরিয়ে ওঠবস, বিতর্কে পরিবহণ আধিকারিক]
শীত মানেই বক্রেশ্বরের গরম জলে স্নান। তার সঙ্গে এই এলাকার গরম জলের মাহাত্ম্য অনেক দিনের। এখানকার জল খেলেই পেটের রোগ সারবে। এই বিশ্বাসে বৈতরণি গঙ্গার গরম জল খাওয়ার লাইন লেগেছে বক্রেশ্বর সতী পীঠে। সঙ্গে ভিড় বাড়ছে পাপহরা গঙ্গার গরম জলে গা ডুবিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটানোর। জানুয়ারি শুরুতে শীতের মারকাটারি ইনিংস শুরু হওয়ার পর থেকে ভিড় প্রতিদিন গড়ে পাঁচ-ছ’হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। শনি-রবি ছুটির দিনে উৎসাহীদের ভিড় দশ হাজারের উপর ছাড়িয়েছে। বৈতরণি, পাপহরা, খারকুন্ড, সূর্যকুন্ড, ভৈরব কুন্ড, সৌভাগ্য কুন্ড, শ্বেত গঙ্গা। সব কুন্ডে বিভিন্ন রকম তাপমাত্রা।
[হাড়হিম করা শীতেও বাঙালির পাতে মিলবে খাস পদ্মার ইলিশ]
প্রসঙ্গত, হিলিয়াম গ্যাসের হেরফেরের জন্য বক্রেশ্বর নদের জল এসে বক্রেশ্বর উষ্ণ প্রস্রবণের জল গরম করে। তবে বৈতরণি গঙ্গার জল খেয়ে পেটের রোগ ভাল হওয়ার জন্য বোতল পিছু পাঁচ টাকা করে বিক্রি করছেন স্থানীয় কিছু যুবক। গত পঁচিশ বছর ধরে এই জল বিক্রির ব্যবসা করছেন নিমাই নাগ। তিনি বলেন জল তুলে খেলে এক টাকা করে গ্লাস। এই জলে হিলিয়াম ও পটাশিয়াম সরাসরি মিশে থাকায় জলে পেট পরিষ্কার হয়।
[গ্যাস সিলিন্ডার বুকিং আরও সহজ, ফেসবুক-টুইটারেই এবার সুযোগ]
রাজ্যে ধর্মীয় ও প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত বক্রেশ্বর। সেখানে গরম জল খাওয়ার পিছনে বিজ্ঞানের যুক্তির থেকেও ভক্তিরসের প্রাবল্য বেশি বলে দাবি করেন বিজ্ঞানীরা। কয়েকজন বিজ্ঞানী এই জল নিয়ে লাগাতার গবেষণা করেছেন। গরম জলের বিপুল চাহিদা দেখে তাকে মোড়কজাত করে বাণিজ্যের পরামর্শ দিয়েছেন কিছু চিকিৎসক। বিশিষ্ট গ্যাস্ট্রোএন্ডোলজিষ্ট চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ওই জলে প্রাকৃতিক কিছু মিশ্রণ আছে। একদিন ওই জল পান করলে খুব যে উপকার হবে তেমন নয়, তবে নিয়মিত খেলে অবশ্যই উপকার হবে। রাজ্য সরকার এটিকে মানুষের ব্যবহার উপযোগী করে বিক্রি করলে মানুষের উপকার হবে। বাড়বে বাণিজ্য। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। শুধু বক্রেশ্বর নয় স্থানীয় তাঁতলৈ গ্রামের কাছেও উষ্ণ প্রস্রবণ রয়েছে। সেখানকার জল নিয়মিত খেলে পেটের রোগের উপকার হবে।
ছবি: বাসুদেব ঘোষ
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.