শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: গুড টাচ এবং ব্যাড টাচ সম্পর্কে স্কুলেই অবহিত করা হয় ছাত্রীদের। সেই শিক্ষা ক্ষেত্রেই এবার ব্যাড টাচের শিকার চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী। অভিভাবকদের অভিযোগ, শুধু একজন নয়, স্কুলের পার্শ্বশিক্ষকের ব্যাড টাচের শিকার একাধিক ছাত্রী। যা নিয়ে মঙ্গলবার উত্তাল হয়ে উঠল জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের মান্তাদারি এলাকা।
স্থানীয় মান্তাদারি বিএফপি স্কুলের ঘটনা। এদিন অভিভাবক এবং গ্রামবাসীরা এককাট্টা হয়ে স্কুলে এসে বিক্ষোভ দেখান। অভিযুক্ত পার্শ্বশিক্ষককে গ্রেপ্তারের দাবিতে স্কুলের বাকি শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের স্কুল ঘরে তালাবন্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে স্কুল পরিদর্শক এলে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে তাঁকেও শারীরিক নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ এবং সর্বশিক্ষা মিশনের সহকারী প্রকল্প আধিকারিক এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। পরে সহকারী প্রকল্প আধিকারিকের পরামর্শে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুলিশের দারস্থ হয়েছেন অভিভাবকরা। ঘটনা জানাজানি হতেই গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত পার্শ্বশিক্ষক। তার খোঁজ চলছে বলে মিলনপল্লী পুলিশ ফাড়ির ওসি হিরুকান্ত রায় জানিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, প্রি পাইমারি থেকে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত ১৯২ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে মান্তাদারি বিএফপি স্কুলে। যার মধ্যে ৯৯ জনই ছাত্রী। ছয়জন স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা সেই সঙ্গে দুজন পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন। গ্রামবাসী এবং অভিভাবকদের অভিযোগ, পার্শ্বশিক্ষক খুরশিদ আলম প্রায় দিনই ক্লাস ফোর এবং ফাইভের ছাত্রীদের শরীরের আপত্তিকর জায়গায় হাত দেয়। দু’দিন আগে এক ছাত্রী অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়। এরপর মুখ খোলে আরও কয়েকজন ছাত্রী। একই অভিযোগ তাদের। এই নিয়ে এদিন স্কুলে এসে অভিযুক্ত শিক্ষকের গ্রেপ্তারির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসী এবং অভিভাবকরা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুল ঘরে তালা দিয়ে আটকে রাখেন তারা। দীপ্তি অধিকারী নামে এক অভিভাবিকা জানান, স্কুলের একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে একই ঘটনা ঘটিয়েছে ওই শিক্ষক। শিক্ষকের শাস্তি চান তারা।
খবর পেয়ে স্কুলে এসে গ্রামবাসী এবং অবিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন স্কুল পরিদর্শক শাজিদ আলম। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, অভিযুক্ত শিক্ষকের হয়ে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন এবং ঘটনাকে লঘু করে দেখার চেষ্টা করছিলেন স্কুল পরিদর্শক। তাতেই উত্তেজনার পারদ চড়ে। স্কুল পরিদর্শককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ এবং সর্বশিক্ষা মিশনের অতিরিক্ত প্রকল্প আধিকারিক রাজীব চক্রবর্তী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। রাজীব চক্রবর্তী বলেন, “অভিভাবকদের অভিযোগ শুনলাম। অত্যন্ত নিন্দাজনক ঘটনা। এমন ঘটনা কোনওভাবেই কাম্য নয়। থানায় অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ আইনানুগ পদক্ষেপ করবে।” পাশাপাশি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর নজরে আনবেন তিনি। স্কুলের শিক্ষিকা কেয়া সেন বলেন, “ছাত্রীদের মুখে ঘটনা শুনে আমরাও হতভম্ব। এমন ঘটনা ঘটতে পারে ভাবতেই পারিনি আমরা।” এদিকে ঘটনা জানাজানি হতেই গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত পার্শ্ব শিক্ষক। তার খোঁজ চলছে বলে মিলনপল্লি ফাড়ির ওসি হিরু কান্ত রায় জানিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.