Advertisement
Advertisement

টিফিনের টাকায় জখম সারমেয়কে হাসপাতালে নিয়ে গেল খুদে পড়ুয়ারা

গাড়ির ধাক্কাতেই জখম হয় সারমেয়টি।

School students save a street dog's life in Burdwan
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:September 4, 2019 1:04 pm
  • Updated:September 4, 2019 4:36 pm  

রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: দুইদিন আগে এই শহরেই প্রকাশ্যে এক নিরীহ কুকুরছানাকে নির্মমভাবে আছড়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। এই অমানবিক ঘটনার ঠিক দু’দিনের মাথায় অবলাদের সেবায় মানবিক দৃষ্টান্তের নজির গড়ল একদল স্কুলছাত্র। দুর্ঘটনায় জখম কুকুরকে স্কুল চত্বর থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করল তারা।

বর্ধমান টাউন স্কুলের পড়ুয়ারা মঙ্গলবার স্কুলে গিয়ে দেখে গাড়ির ধাক্কায় জখম হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে একটি কুকুর। চোখের সামনে ওইভাবে তিলতিল করে মরতে না দিয়ে তারা টিফিনের খরচের টাকা দিয়েই টোটো ভাড়া করে কুকুরটিকে নিয়ে যায় ৫ কিলোমিটার দূরের পশু হাসপাতালে। সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন ওই কুকুরটি। আর তাদের এই সমস্ত মানবিক কর্মকাণ্ডের সাক্ষী থাকলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন চত্বরে থাকা কয়েক হাজার মানুষ। কেউ এসে ছবি তুললেন। ওই পড়ুয়াদের কাজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ শহরের অনেকেই। একইসঙ্গে তাদের মানবিক কর্মকাণ্ড অজান্তেই বড়দেরকেও প্রাণীদের প্রতি মানবিক হওয়ার পাঠও দিল বলে মনে করছেন পশুপ্রেমীরা।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: ছেলে-বউমার অত্যাচারে বাড়িছাড়া, বৃদ্ধ দম্পতিকে ঘরে ফেরাল ‘দিদিকে বলো’ ]

দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র অভিজিৎ রায়, তমাল ঘোষরা জানায়, স্কুলেই থাকত কুকুরটি। তার সঙ্গে আরও অনেকগুলো কুকুর রয়েছে। স্কুলে বহুদিন ধরে পড়ার সুবাদে তারা দেখে আসছে কুকুরগুলিকে। বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে কুকুরগুলির সঙ্গে। কিন্তু এদিন সকালে স্কুলে গিয়ে তারা দেখে কুকুরটি গুরুতর চোট পেয়েছে। যন্ত্রণায় ছটফট করছে। অন্য দিনের মতো আর ছুটে আসতে পারছে না। স্কুলে অনেক গাড়ি ঢোকে। সেই গাড়ির ধাক্কাতেই কুকুরটির এই অবস্থা বলে মনে করছে তারা। সঙ্গে সঙ্গে ঠিক করে বাঁচাতেই হবে বন্ধুকে। তাই আর দেরি না করে সামনে থাকা একটি আবর্জনা ফেলার ঠেলা গাড়িতে কুকুরটিকে চাপিয়ে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে তারা। সেখান থেকে প্রথমে অদূরে বর্ধমান পশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা করেন কুকুরটিকে। তার পর সেটিকে নবাবহাটে পশুদের বড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক।

সঙ্গে সঙ্গে পড়ুয়ারা টিফিনের টাকা দিয়ে একটি টোটো ভাড়া করে কুকুরটিকে তুলে নেয়। নবাবহাটে পশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে তাঁদের প্রিয় সারমেয়টি। অভিজিৎ, তমালদের কথায়, “শিক্ষক ও অন্য  ছাত্ররা সবাই চায় কুকুরটি যেন বেঁচে যায়। তাই আমরা কোনও কিছু না ভেবে ওকে বাঁচাতে চাই।” প্রসঙ্গত, তিন দিন আগেই বর্ধমানের খোসবাগান এলাকায় একটি কুকুর ছানাকে আছাড়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে এক যুবকের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় পুলিশেও অভিযোগ দায়ের করে এক পশুপ্রেমী সংগঠন। তারপরেই পড়ুয়াদের এই মানবিক ঘটনা। পশুপ্রেমী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এইভাবে সকলে এগিয়ে এলে এইসব অবলাদের কষ্ট লাঘব হবে।”

[ আরও পড়ুন: ফের রাতের ট্রেনে দুষ্কৃতী তাণ্ডব, ছিনতাইয়ের পর মহিলাকে ধাক্কা ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement