আত্মঘাতী ছাত্রী।
শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: পরীক্ষায় নকল করার ‘মিথ্যা’ অভিযোগ। আর সেই অপবাদের জেরে নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করল অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী। জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন দেবনগর এলাকার ওই কিশোরীর বাড়ি থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। যেখানে সে দাবি করেছে, পরীক্ষায় নকল করার মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছিল তার নামে। এই লজ্জা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে সে। এদিকে পরিবারের তরফেও স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্কুলের এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা তোলা হয়েছে।
পরিবার সূত্রে খবর, অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া শ্রেয়ার বিরুদ্ধে পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ এনেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সে নকল করেনি, এই দাবিতে অনড় ছিল শ্রেয়া। এদিকে ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের স্কুলে ডেকে পাঠায় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, ক্লাসেরই এক ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্রীর পরিবারকে ডেকে পাঠান স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু লাভ হয়নি। বাড়িতে ফিরে মনমরা হয়ে পড়ে শ্রেয়া। এরপর রাতের দিকে নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে। ছাত্রীর ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে।
সুইসাইডে নোটে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছে কিশোরী। লিখেছে,”মিথ্যা অপবাদ সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম। পরিবার ও বন্ধুরা আমাকে দোষী ভাবছে। ওদের মুখোমুখি হওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। কিন্তু আমি কখনও নকল করিনি। আজও এরকম কোনও কাজ করিনি।” স্বাভাবিকভাবে এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া। পাশাপাশি স্কুল ও এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে পরিবার। শ্রেয়ার মৃত্যুর জন্য স্কুল ও ওই ছাত্রীকে দায়ী করেছে মৃত কিশোরীর মামি সোমাশ্রী সাহা ও প্রতিবেশী নীহার সরকার।
এদিন খবর পেয়ে কিশোরীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। পরিবার সূত্রে খবর, স্কুল ও ছাত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করবে তারা। এ বিষয়ে জলপাইগুড়ি সুনীতিবালা সদর বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুতপা দাস জানান, “গতকাল অনেক ছাত্রীর পরিবারকে ডাকা হয়েছিল। ভবিষ্যতে তারা যাতে এরকম না করে সেই নীতিশিক্ষা দিতে। কিন্তু এরকম ঘটনা ঘটবে, তা ভাবিনি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.