ছবি: প্রতীকী
দীপঙ্কর মণ্ডল ও ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: আমজনতার জীবনযাপন উন্নয়নের লক্ষ্যে একগুচ্ছ সামাজিক প্রকল্প এনেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরকার। শিশুদের শিক্ষার হার বাড়াতে ‘কন্যাশ্রী’, ‘সবুজ সাথী’র মতো একাধিক সুবিধা মিলছে। আর তারই সুফল পাওয়া যাচ্ছে হাতেনাতে। এক বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, এ রাজ্যে অনেকটা কমেছে স্কুলছুটের (School dropout) সংখ্যা। ৩.৩ শতাংশ থেকে কমে রাজ্যে তা দাঁড়িয়েছে ১.৫ শতাংশে।
প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র পরিবারের মেয়েরা ছোটবেলায় স্কুলে ভরতি হয়েও পরবর্তী সময়ে অভাব, অনটনের কারণে পড়াশোনা আর চালিয়ে যেতে পারে না। স্কুলছুট হয়ে অনেক কম বয়স থেকেই পরিবারকে সাহায্যের জন্য আয়ের পথ ধরতে হয় তাদের। মূলত এদের সুরাহার জন্যই ‘কন্যাশ্রী’ (Kanyasree) প্রকল্প চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের আওতায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মেয়েরা সরকারি স্কলারশিপের মাধ্যমে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে পারে অতি সহজেই। এছাড়া বাড়ি থেকে স্কুলের লম্বা দূরত্বও যাতে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রে অন্তরায় না হয়ে দাঁড়ায়, তার জন্য ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পে ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল বণ্টন করা হয় সরকারি তরফে। মূলত এই দুই প্রকল্পের সুবিধা লাভেই স্কুলছুটের সংখ্যা অনেক কমেছে বলে জানা যাচ্ছে বেসরকারি ওই সমীক্ষার রিপোর্টে (Survey report)।
২৬টি রাজ্যের ৫৮৪টি জেলার ১৬ হাজারের কিছু বেশি গ্রামের মধ্যে ৫২ হাজারেরও বেশি পরিবারকে বেছে নিয়েছিল সংস্থাটি। ২০১৮ থেকে ২০২০ – এই দু’বছরের হিসেব খতিয়ে দেখেছে তারা। তাতেই দেখা গিয়েছে, রাজ্যে স্কুলছুটের সংখ্যা ৩.৩ শতাংশ থেকে ১.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। সেখানে জাতীয় ক্ষেত্রে স্কুলছুটের গড় দেখা যাচ্ছে ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫.৫ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, কর্ণাটকে এই মুহূর্তে স্কুলছুটের সংখ্যা ১১.৩ শতাংশ, তেলঙ্গানায় ১৪ শতাংশ এবং রাজস্থানে ১৪.৯ শতাংশ।
এ নিয়ে স্কুলশিক্ষা দপ্তরের বক্তব্য, ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পে নগদ টাকা পাচ্ছে পড়ুয়ারা। আর ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পে মিলছে সাইকেল। এছাড়াও মিড-ডে মিলে পেট ভরা খাবারও পাচ্ছে পড়ুয়ারা। মিলছে বিভিন্ন স্কলারশিপ, বিনামূল্যে বই এবং স্কুলের পোশাক। এসব কারণেই স্কুলছুট কমছে বলে মনে করছেন শিক্ষা দপ্তরের ওই কর্তা। তিনি বলেন, ”স্কুলছুটের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা আমাদের লক্ষ্য।”
অন্যদিকে, বেসরকারি সংস্থাটির সমীক্ষা রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, পড়ুয়াদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিলির নিরিখে শীর্ষে আছে পশ্চিমবঙ্গ। এ রাজ্যে ৯৯.৭ শতাংশ পড়ুয়ার কাছে স্কুলের বই পৌঁছে গিয়েছে একেবারে নিখরচায়। পিছনে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাট, অন্ধ্রপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য। ওই রাজ্যগুলিতে গড়ে যথাক্রমে ৭৯.৬, ৬০.৪, ৯৫, ৩৪.৬ এবং ৮০.৮ শতাংশ পড়ুয়ার কাছে বই পৌঁছে দেওয়া যায়নি লকডাউনের কারণে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.